পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে ইচ্ছামতো শর্ত

ফাইল ফটো
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪ | ১১:০৬
দেশের চারটি জেলায় শুরু হচ্ছে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কাজ। এ জন্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে পছন্দের ঠিকারদারকে কাজ দিতে সেই দরপত্রে ইচ্ছামতো শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এতে অন্যান্য ঠিকাদার দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত ৯ অক্টোবর ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের আওতাধীন ডিজিটাল সার্ভে প্রকল্প এ দরপত্র আহ্বান করে। গত ৪ নভেম্বর দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ১৪ নভেম্বর করা হয়েছে। তবে সময় বাড়লেও শর্তের বেড়াজালে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ দরপত্রে অংশ নিতে পারছে না। চারটি প্রকল্পের মধ্যে পটুয়াখালীর আট উপজেলায় ৮ লাখ ৭৬ হাজার ২০৫ একর, বরগুনার আট উপজেলার ৬ লাখ ৩ হাজার ৪৩৩ একর, পাবনার ৯ উপজেলার ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৮ একর এবং সিরাজগঞ্জের সাতটি উপজেলার ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫২৬ একর জমির ডিজিটাল ম্যাপ করার কাজ রয়েছে।
জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল ভূমি জরিপ কাজে ড্রোন উড়িয়ে জমির পূর্ণ ছবি ধারণ করে স্যাটেলাইট ইমেজিংয়ের মাধ্যমে জমির অবস্থান ও মাপ নিশ্চিত করা হবে। স্যাটেলাইট ইমেজ কিনে সেটা মৌজা ম্যাপের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং ম্যাপ তৈরি করা হবে। ফলে কৃষিজমি, জলাভূমি, পাহাড়, বনভূমি রক্ষাসহ জমির পরিকল্পিত ব্যবহার করাও সম্ভব হবে। এ ছাড়া ইটিএসের মাধ্যমে জমির নির্ভুল পরিমাপ বা প্লট ভাগ করা হয়। প্লট টু প্লট জরিপ সম্পন্ন হলে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার তথ্যটি সহজেই জানা যাবে।
কয়েকজন ঠিকাদার জানান, দরপত্রে সবচেয়ে বড় কাজ হিসেবে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। ড্রোন ব্যবহারের দুই বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। পুঁজি হিসেবে ২০ কোটি টাকা দেখাতে হবে। ডিজিটাল সার্ভে প্রকল্পের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার হতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় শুভঙ্করের ফাঁকি হিসেবে শর্ত দেওয়া হয়েছে, বিগত তিন অর্থবছরের টার্নওভার কর্তৃপক্ষের সন্তোষজনক হতে হবে।
ঠিকাদাররা জানান, এই টার্নওভারের শর্ত দিয়ে কর্তারা যে কাউকে বাদ দিতে পারবেন, যে কাউকে কাজ দিতে পারবেন। মূলত বিগত সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের যেসব ঠিকাদার সব কাজ বাগিয়ে নিয়েছিলেন, তাদেরকে কাজ দিতেই এমন জটিল শর্ত যোগ করা হয়েছে।
তবে ডিজিটাল সার্ভে প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ডিজিটাল ভূমি জরিপ কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির মতামতের ভিত্তিতে দরপত্রের শর্ত আরোপ করা হয়েছে। অনেক দরপত্র জমা পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।