ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পদের হিসাব দিতে সরকারি কর্মচারীদের দৌড়ঝাঁপ

সম্পদের হিসাব দিতে সরকারি কর্মচারীদের দৌড়ঝাঁপ

লোগো

 সাব্বির নেওয়াজ

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | ০০:৫৭ | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | ১১:৪২

আর বাকি ১৩ দিন। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পদের হিসাব দিতে হবে দেশের ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীকে। এ জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন তারা। পরীক্ষা করছেন আয়কর ফাইল। কেউ কেউ নিচ্ছেন আইনজীবীর পরামর্শ।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার আবারও সরকারি কর্মচারীদের বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে তাগাদাপত্র দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রত্যেককে নির্ধারিত ফরমে তাঁর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সিলগালা খামে সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে। যারা দেশের বাইরে কর্মরত, তারাও নিজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ হিসাব জমা দেবেন।

ক্যাডার ও নন-ক্যাডার (নবম বা তদূর্ধ্ব গ্রেড) কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিবের কাছে। আর গেজেটেড, নন-গেজেটেড কর্মকর্তা-কর্মচারীরা (দশম থেকে ২০তম গ্রেড) নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন। মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ছকে সম্পদের তথ্য উল্লেখ করতে হবে। মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে ছকটি সংগ্রহ করা যাবে। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বর শনিবার সরকারি ছুটির দিন। তাই তারা আশা করছেন, দু’দিন আগে অর্থাৎ ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবারের মধ্যে সবাই সম্পদ বিবরণী জমা দেবেন।

এ বছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দিতে হলেও আগামী বছর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে।
বর্তমানে দেশে সরকারি কর্মচারী প্রায় ১৫ লাখ। কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একত্রে সরকারি কর্মচারী হিসেবে অভিহিত করা হয়।

সরকারি কর্মচারীরা সর্বশেষ ২০০৮ সালে সে সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিজের  সম্পদের হিসাব জমা দেন। ১৬ বছর পর আবার তারা এই হিসাব দিতে যাচ্ছেন। পাঁচ বছর পর পর তাদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও এতদিন তা যথাযথভাবে প্রতিপালন হয়নি। এখন প্রতি বছর তাদের এই হিসাব দেওয়ার বিধান করা হয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গত ১ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশনা দেয়। সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে যাদের আয় করসীমার নিচে তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয় না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, আয় করসীমার ওপরে হোক বা নিচে– সবাইকে সরকারের কাছে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে হবে। আয়কর রিটার্নের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক জ্যেষ্ঠ সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, ১৫ লাখ কর্মচারীর সম্পদের তথ্য যাচাই এত সোজা নয়। এটা বিপুল কর্মযজ্ঞ। এই জনবল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নেই। সবার সম্পদের তথ্যের সত্যতা যাচাই হবে একটি দুরূহ কাজ। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান সমকালকে বলেন, ‘প্রতি বছর সম্পদ বিবরণী নেওয়া হলো কর্মচারীদের জন্য একটা লাগাম। দুর্নীতির লাগাম টানতে হবে।’

মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য বা কিছু গোপন করা হলে সেটি ১৯৭৯ সালের বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।‌ এই অনুশাসন সব কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।’

আরও পড়ুন

×