ঢাকা রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

বিদ্যুতে ‘শ্বেতহস্তী’ রামপালে সুন্দরবনের সর্বনাশ

বিদ্যুতে ‘শ্বেতহস্তী’ রামপালে সুন্দরবনের সর্বনাশ

কোলাজ

 হাসনাইন ইমতিয়াজ, ঢাকা,  তানজীম আহমেদ, বাগেরহাট 

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০১:৪৪ | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১০:২৭

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা পশুর নদে সাত-সকালে মাছ ধরছিলেন মুজাহিদ হোসেন। মাছ কেমন পাচ্ছেন– প্রশ্ন করতেই শোনা গেল তাঁর বারুদ-কণ্ঠ। বললেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র মহাসর্বনাশ করে দিয়েছে। ঘণ্টা তিনেক বসে কিছু মাছ পেয়েছি। এখন নামতে হবে মাছ বেচার যুদ্ধে। কেউ পশুর নদের মাছ কিনতে চায় না।’

কেন এ পরিস্থিতি– এমন প্রশ্নে হাতের ইশারায় দেখালেন একটু দূরে ধোঁয়া ওঠা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুউচ্চ চিমনি। এলাকা ঘুরে পাওয়া গেল মুজাহিদের কথার সত্যতা। বছর পাঁচেক আগেও এসব এলাকা মুখর থাকত পাখির কূজনে। এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রের কিছু দূরের গাছপালাও হয়ে গেছে বিবর্ণ। গাছে গাছে কমেছে নারকেল-সুপারি। বাড়িতে পোষা হাঁস-মুরগি সব সময় থাকে মরমর! বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের নদী-জলাশয়ের মাছও হয়ে গেছে ‘বিষ’। ঘরে ঘরে অসুখ-বিসুখ তো লেগেই থাকে।

সরকারি সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, পরিশোধন ছাড়াই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহৃত পানি ছাড়া হচ্ছে পাশের নদীতে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কয়লা ও উৎপাদিত ছাই নিয়মিত দূষণ করছে আশপাশের পানি, মাটি ও বায়ু। ফলে এলাকায় বাড়ছে নাইট্রেট, ফসফেট, পারদসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে জলজ, বনজ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর। সংকটে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন।

শুধু পরিবেশ কিংবা প্রতিবেশ নয়, ১৬ হাজার কোটি টাকার ভারত-বাংলাদেশের যৌথ মালিকানার কয়লাচালিত কেন্দ্রটি দেশের অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়েছে দাঁড়িয়েছে। অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনায় চালুর পর থেকেই পূর্ণ ক্ষমতায় খুব কম চলেছে কেন্দ্রটি। নিম্নমানের যন্ত্রপাতির কারণে বন্ধ হচ্ছে বারবার। গত অর্থবছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতার মাত্র ২৪ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে। এ কেন্দ্রের জন্য গত অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। 

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুন্দরবনের সম্ভাব্য ক্ষতির শঙ্কায় শুরু থেকেই প্রকল্পটির বিরোধিতা করে আসছে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন। প্রতিবাদ হয়েছে দেশে-বিদেশে। তবে কোনো কিছুতেই কান না দিয়ে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার বাগেরহাটের রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করে। মূলত ভারতকে খুশি করতেই সুন্দরবনের জন্য ঝুঁকি জেনেও বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে।

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১০ সালে। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি পিডিবি ও ভারতের এনটিপিসির মধ্যে চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল) গঠন করা হয়। প্রকল্পের ঋণ দিয়েছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। ঠিকাদার সে দেশেরই প্রতিষ্ঠান ভেল। ২০২২ সালের‌ ২৩ ডিসেম্বর প্রথম ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর থেকে দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিকভাব চালু হয়।

নিম্নমানের যন্ত্রপাতি, বন্ধ বারবার 

গত বছর চালু হওয়ার পর কয়লা সংকট ও যান্ত্রিক ত্রুটিতে এ পর্যন্ত কয়েক দফা বন্ধ হয়েছে রামপালের বিদ্যুৎ উৎপাদন। এর মধ্যে যান্ত্রিক কারণে অন্তত আটবার বন্ধ হয় কেন্দ্রটি।

যেসব ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্র বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে রয়েছে টারবাইনে সমস্যা, বয়লার টিউব লিকেজ, কুলিং হিটারে লিকেজ, হাইপ্রেশার স্টিম লিকেজ, অয়েল লিকেজ ও গ্ল্যান্ডফিল লিকেজ।

পিডিবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্রেই শুরুতে নানা জটিলতা থাকে। ধীরে ধীরে ত্রুটি সারিয়ে সেগুলো 

পূর্ণ ক্ষমতায় চলতে পারে। তবে বয়লার ও টারবাইনে সমস্যা হলে তা বড় ধরনের কারিগরি দুর্বলতা। এ সমস্যা বারবার হলে চিন্তার কারণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক প্রকৌশলী বলেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের জুনে। কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কারিগরি ত্রুটির কারণে এক দিনও বন্ধ থাকেনি। যদিও রামপাল বারবার বন্ধ হয়েছে কারিগরি ত্রুটিতে।

সূত্র জানিয়েছে, ৬০০ মেগাওয়াট লোডে দীর্ঘ সময় উৎপাদনে থাকলেই বয়লারের টিউব লিকেজ হচ্ছে। এ বিষয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিআইএফপিসিএল প্রকল্প পরিচালক সুভাস চন্দ্র পাণ্ড সমকালকে বলেছিলেন, টিউব দীর্ঘ সময় গুদামে পড়ে থাকায় সমস্যা হচ্ছে। এমন সমস্যা ভারতের বিভিন্ন কেন্দ্রেও হয়েছে। কয়েক বছর পর এটি থাকবে না।

বুয়েটের অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে রামপালে যে মানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার কথা ছিল, তা হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

গত বছরের আগস্টে একটি গোয়েন্দা সংস্থা রামপাল নিয়ে একটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে দেয়। এতে বলা হয়, ২০১৮ সাল থেকে প্রকল্পের বিভিন্ন ধরনের কেবল, ইনসুলেশন, যন্ত্রপাতি খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকে। বিশেষ করে করোনার সময় দুই বছর প্রকল্পের কার্যক্রম পুরো বন্ধ ছিল। তখনও যন্ত্রপাতি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। রোদ-বৃষ্টিতে এসব মালপত্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকটির মেয়াদ পেরিয়ে যায়। পরে এসব অকেজো যন্ত্রপাতি প্রথম ইউনিট স্থাপনে ব্যবহার করা হয়। ফলে বিভিন্ন সময়ে বারবার যন্ত্র বিকল হয়ে উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় দেশীয় প্রকৌশলীদের রাখা হয়নি, ছিলেন ভারতীয় প্রকৌশলীরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের সহকারী ঠিকাদার হিসেবে ৪৭ কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৭টিই ভারতের।

বিদ্যুৎকেন্দ্র যেন বোঝা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বলেন, বড়পুকুরিয়া কেন্দ্রের পুরোনো দুটি ইউনিটে নির্মাণজনিত ত্রুটি থাকায় এখনও পিডিবিকে ভোগাচ্ছে। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করায় টঙ্গী ৮০ মেগাওয়াট গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পিডিবির জন্য শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, রামপালের কাজ এখনও ঠিকাদার পুরোপুরি হস্তান্তর করেনি। তাই কোনো ত্রুটি থাকলে এর স্থায়ী সমাধান না করলে এভাবে বারবার বন্ধ হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ না পেলেও চুক্তি অনুসারে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতেই হবে। এতে এই খাতের লোকসান বাড়বে।

জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে কঠিন শর্তে ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা করে ইক্যুইটি বিনিয়োগ করেছে পিডিবি ও এনটিপিসি। এই ইক্যুইটি বিনিয়োগের ওপর ১৮ শতাংশ হারে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট (আরওআই) নিচ্ছে বিআইএফপিসিএল। যদিও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আরওআই নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ শতাংশ। ২০১২ সালে কোম্পানি গঠনের পর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চার বছরের মধ্যে নির্মাণের কথা ছিল। যদিও তা নির্মাণ করতে লেগেছে প্রায় আট বছর। পুরো সময়েই ১৮ শতাংশ হারে আরওআই নিয়েছে কোম্পানিটি। মূল বিনিয়োগের সঙ্গে তা যোগ করে ইক্যুইটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। এতে কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ বেড়েছে। এখন পর্যন্ত চালু কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ রামপালের, প্রতি ইউনিটের জন্য গড়ে ৪ দশমিক ৮৫ সেন্ট। এ কেন্দ্রটির জন্য পিডিবিকে গত অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে ১ হাজার ৫৯৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিটে ক্যাপাসিটি চার্জ গড়ে ৪ দশমিক ২১ সেন্ট।

ধুঁকছে সুন্দরবন

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) গত সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিশোধন ছাড়াই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দূষিত পানি সুন্দরবনের মাইদারা ও পশুর নদে ছাড়া হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের তথ্য নিয়ে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্জ্য ঠিকমতো না ঢেকেই পরিবহন করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুসারে কয়লা রাখার শেড, কোলস্ট্যাক ইয়া র্ড ও অ্যাশ সাইলো নির্মাণ হয়নি। ফলে সুন্দরবনের পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। নদীর পানিতে দূষণকারী পারদ, নাইট্রেট ও ফসফেটের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের পাশাপাশি প্রকল্প এলাকা করমজল, হারবাড়িয়া, আকরাম পয়েন্ট ও হিরন পয়েন্টে কোনো পাখির বাসা দেখা যায়নি। চারণভূমি বিলুপ্ত হয়েছে, গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যাও কমেছে। প্রকল্প এলাকার ৭০ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে থাকা নদী-জলাশয়ের মাছ বিপজ্জনক বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। 

গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও পরিবেশ দূষণের বিষয়টি উঠে আসে। তারা বলছে, কয়লার শেডের ভেতরে পানি প্রতিরোধ করার নিয়ম থাকলেও দায়সারা ব্যবস্থাপনার ছাপ পাওয়া যায়। কেন্দ্রের ছাই রাখার পুকুরটি অরক্ষিত। শুধু গর্ত করে ছাই রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রটি নির্মাণে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা থাকলেও এতে সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে দূষণ বেশি হয়। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান নদীর পানিতে মিশে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গবেষণায় দেখা যায়, নদীতে প্রতি লিটার পানিতে যে পরিমাণে মাছের রেণু পাওয়া যেত, ডিম পাওয়া যেত, সেটি এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। কেন্দ্রের কাছাকাছি সুন্দরবন এবং পশুর নদে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। পশুর নদে একটা নির্দিষ্ট সময় দাঁড়িয়ে থাকলে আগে যে পরিমাণ ইরাবতী ডলফিন দেখা যেত, এখন তা দেখা যাচ্ছে না। 

পরামর্শ সেবা প্রশ্নবিদ্ধ

রামপাল কেন্দ্রের পরামর্শ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জার্মান প্রতিষ্ঠান ফিশনারকে। যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ ওঠায় সরকার ফিশনারকে দিয়েই যন্ত্রপাতির মান যাচাই করে। ফিশনার তার প্রতিবেদনে জানায়, সব ঠিক আছে। ফিশনারকে দিয়ে যাচাইয়ের কাজ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খাত-সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ফিশনার প্রকল্পের পরামর্শক। ফলে এখানে কেমন কাজ হয়েছে, কী ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়েছে, সব ফিশনারের তদারকিতেই হয়েছে। এখন সেসব যন্ত্রপাতির মান যাচাইয়ের কাজও যদি জার্মান কোম্পানিটি করে, তাহলে তা স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখা যায়। 

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, রামপাল প্রকল্পের শুরু থেকেই পরিবেশবাদীরা আপত্তি জানিয়ে আসছেন। বারবার যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য রামপালেরর ঠিকাদার ভেলের দায় রয়েছে বলে মনে করেন শামসুল আলম। তিনি বলেন, দুর্নীতি ধামাচাপা দিতেই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিয়েই যাচাইয়ের কাজ করা হয়েছে।

কারা কী বলছেন

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, পরিবেশের বিপর্যয় হবে জেনেও ভারতকে খুশি করার জন্য রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছিল।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. নাসিফ আহসান বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থানীয় পরিবেশ ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। 

পরিবেশকর্মী প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা বলেন, ক্ষতিকর প্রকল্পটি যত দিন চালু থাকবে, ক্ষতি তত বেশি হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এ রকমই একটি প্রকল্প। 

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সমকালকে বলেন, বিআইএফসিএল বোর্ডের সদস্যরা সম্প্রতি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করে এসেছেন। কয়লার পরিবহন, পানি, পরিবেশ দূষণের বিষয়ে তারা সরেজমিন দেখে প্রতিবেদন দেবেন। সেটি পেলে বর্তমান অবস্থার একটি ধারণা পাওয়া যাবে। পরে সে অনুযায়ী সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

প্রকল্পটি পরিবেশের ক্ষতি করছে, পাশাপাশি ঠিকমতো চলছে না, এটি বন্ধেরও দাবি উঠেছে– এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র তো হয়ে গেছে, এটা নিয়ে আরেকটি দেশের সঙ্গে চুক্তিও আছে। তাই হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া তো যায় না। কীভাবে দূষণের মাত্রা কমানো যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।

আরও পড়ুন

×