ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় আড়াই মাসে ৮৮ মামলা, গ্রেপ্তার ৭০

সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় আড়াই মাসে ৮৮ মামলা, গ্রেপ্তার ৭০

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি-সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯:২২ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২০:৫৪

আড়াই মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় দেশে মোট ৮৮টি মামলা করা হয়েছে এবং এসব মামলায় ৭০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান। এসব তথ্য বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ সূত্রে পাওয়া বলেও জানান প্রেস সচিব।

শফিকুল আলম বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২২ অক্টোবরের পরের ঘটনাগুলোর আপডেট শিগগির দেওয়া হবে, এগুলো নিয়ে কাজ চলছে। যারা ন্যাক্কারজনক এসব ঘটনায় জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ ও নরসিংদীর ঘটনায় আমরা সময়মতো আপডেট দেব।

সংখ্যালঘুর ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে সংখ্যালঘু হিসেবে নয়, আওয়ামী লীগের পদধারী ছিলেন বলে হামলার শিকার হচ্ছেন। তবে যে কারণেই হোক না কেন, ক্রাইম হলেই আমরা এগুলো সিরিয়াসলি নিচ্ছি।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ৮৮টি মামলার মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মামলা হয়েছে ৬২টি। ধর্মীয় পূজামণ্ডপ, উপাসনালয় কেন্দ্রিক সহিংসতায় পুলিশের কাছে সরাসরি রিপোর্ট করা তথ্য অনুযায়ী মামলা হয়েছে ২৬টি। ৬২টি মামলায় গ্রেপ্তার ৩৫ জন এবং বাকি ২৬টি মামলায় গ্রেপ্তার ৩৫টি।

গ্রেপ্তারদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, কাউরে রাজনৈতিক পরিচয়ে তো গ্রেপ্তার করা হয় না। যাকে সন্দেহভাজন ধরা হচ্ছে বা অভিযোগ আসছে তাকেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ৮৮টি মামলার ঘটনা সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা সম্পর্কিত হলেও আমাদের নজরে এসেছে অনেকগুলো ক্ষেত্রে এমন হয়েছে যে তাদের কেউ আগের ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি হয়তো সংখ্যালঘু। রুলিং পার্টির সদস্য ছিল তার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এটাকে আপনারা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন, উনি কী রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আক্রমণের শিকার হয়েছে নাকি সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে। এক্ষেত্রে তার রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য নাকি সম্প্রদায়ের বিষয়টি। তবে, যাইহোক যেহেতু সহিংসতা ঘটেছে এজন্য আমরা মামলা করেছি। আমরা এ বিষয়টি সিরিয়াসলি নিচ্ছি।

সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না এমন অভিযোগর জবাবে প্রেস সচিব বলেন, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না এটা সরলীকরণ হয়ে গেলো। আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা আছে। পুরো বিশ্ববাজার আমরা মনিটর করছি। সয়াবিন ও পাম অয়েলের ক্ষেত্রে অক্টোবর-নভেম্বর থেকে মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী। ৯২০-৯৪০ ডলারের টনের তেল এখন ১২০০ ডলার পর্যন্ত উঠেছে। সয়াবিনের মার্কেট প্লেয়ার কিন্তু কম। ৩/৪টি কোম্পানি মূলত মার্কেটটা নিয়ন্ত্রণ করে। তারা অনেক বড় পরিসরে আমদানি করে। এই পুরো বিষয়টি আমাদের মনিটরিংয়ে আছে। মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী হলে আমরা অ্যাডজাস্ট করি। কোন দেশে অ্যাডজাস্টমেন্ট হয় না। আমরা ভোক্তাদের কথা চিন্তা করে তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এটা করছি। আমরা মালয়েশিয়া, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার বাজার মনিটর করছি। কোম্পানিগুলো কোন ফাউল প্লে করছে কিনা এজন্য বিদেশে কম্পিটিশন কমিশন দেখে। আমরা খুব দ্রুত প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করব। তারা এটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। প্রতিটি মৌসুমি পণ্যের মূল্য কমেছে বলে দাবি করেন প্রেস সচিব।

ছাত্রলীগ-যুবলীগের অনেকে কলকাতায় বসে বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন— এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ কী জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা অনেক লুটপাট, চুরিচামারি করে ওখানে গিয়েছে। তারা অনেক ধরনের কথাবার্তা ওখানে বসে বলছেন। তবে এটা কে কীভাবে নিচ্ছেন এটা হলো বড় কথা। আমাদের কথা হলো। তারা গত ১৫ বছরের অপশাসনের প্রতীক ছিল। এদেরকে কারা মাইলেজ দিচ্ছে এটা তাদের ইস্যু। এ বিষয়ে আমরা কমেন্ট করতে চাই না।
 

আরও পড়ুন

×