ফুটপাতের দোকানে ছুটছে নিম্ন আয়ের মানুষ
মির্জাপুর সরকারি এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কম দামে গরম কাপড় বেচাকেনা সমকাল
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) ও হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:০৬
কয়েকদিন ধরে জেঁকে বসেছে শীত। এই শীতে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। একটু উষ্ণতার খোঁজে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন তারা।
শীতে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছেন স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। অল্প দামে গরম কাপড় কিনতে সব বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে।
মির্জাপুর সরকারি এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর, গোড়াই শিল্পাঞ্চল, বাশলৈ, পাকুল্যাসহ বিভিন্ন এলাকায় কম দামের গরম কাপড়ের দোকান বসেছে। এসব দোকানে দেখা গেছে ছোট-বড় সব বয়সীর গরম কাপড় বিক্রি করতে।
শুক্রবার উপজেলা সদরে হাটবার। হাটের দিন মির্জাপুর সরকারি এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেখা গেছে কম দামের গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। সকাল থেকেই দেখা গেছে এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড়।
পোষ্টকামুরী গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকা কুড়িগ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, ‘বাজারের বড় দোকান থেকে বেশি টাকা দিয়ে গরম কাপড় কিনতে পারি না। শীত থেকে রক্ষা পেতে তাই এই কম দামের দোকানে এসেছি।’
অস্থায়ী দোকানি রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের দোকানে সাধারণত স্বল্প আয়ের মানুষ আসেন। যাদের নামি-দামি দোকান থেকে বেশি টাকা দিয়ে গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই তারাই আসেন আমাদের দোকানে।’
এ ছাড়া ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ফুটপাতেও বসেছে গরম কাপড়ের দোকান। এসব দোকানেও ভিড় করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। উপজেলা সদরের পদ্মা ব্যাংকের সামনে দিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাদ্দাম মিয়া। ফুটপাতের দোকানে ভিড়ে দেখে থামলেন। অনেক কাপড় দেখে নিজের এক ছেলে, এক মেয়ের জন্য গরম কাপড় কিনলেন। দাম ১৮০ টাকা। সাদ্দাম জানান, এ ধরনের পোশাক মার্কেটে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার নিচে পাওয়া যাবে না। গরিব মানুষের জন্য ফুটপাতই ভরসা। কামারপট্টিতেও বসেছে গরম কাপড়ের দোকান। তবে বেশি দোকান পদ্মা ব্যাংকের কাছে।
এখানে একজন কাপড় দেখছিলেন আর এদিক-সেদিক তাকাচ্ছিলেন। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারি চাকরি করি। আমার কাছের কেউ দেখলে শরম, এই জন্য এদিক-সেদিক তাকাচ্ছিলাম। হাতে টাকা-পয়সাও কম। তাছাড়া এখানে কম দামে ভালো মানের জামাকাপড় পাওয়া যায়। চিন্তা করলাম পরিবারের জন্য কয়েকটি গরম কাপর নিয়ে যাই।’
সুরুজ আলী নামে একজন মোটরসাইকেল চালক ছোটবড় পাঁচটি জামা কিনলেন ৮৫০ টাকায়। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেল দিয়ে সারাদিন ভাড়া মেরে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পাই। এই টাকা দিয়ে পরিবারের বাজার খরচ মিটিয়ে নতুন কাপড় কেনা সম্ভব নয়। যে কাপড় কিনছি ৮৫০ টাকা দিয়া তা নতুন কিনলে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা লাগবে।’
ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এই হাট বসে। প্রতিদিন এখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার কাপড় বিক্রি হয়। তাদের কাছে এটি ‘গরিবের হাট’ হিসেবে পরিচিত।
- বিষয় :
- পোশাক খাত