আলোচনা সভায় বিশিষ্টজন
উন্নয়নে প্রবাসী বিশেষজ্ঞদের ভুমিকা প্রয়োজন

আলোচনা সভায় বক্তারা
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২১ | ০৮:৪৬ | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২১ | ০৯:১৩
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম প্রেসিডেন্সির স্পেশাল এনভয় আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বিপুল সংখ্যক দক্ষ জনশক্তি দেশ থেকে বাইরে চলে গেছে। এটাকে ব্রেন ড্রেন বলা যায়। কিন্তু এখন সময় এসেছে ব্রেন গেইন করার। বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তাই বিভিন্ন দেশে আমাদের যে দক্ষ জনশক্তি, যাদের আমরা এনআরবি বলছি তাদের কাজে লাগাতে হবে।
এনার্জি এন্ড পাওয়ার আয়েজিত 'এনআরবি'স এন্ড লোকাল টেকনিক্যাল রিসোর্স ইনট্রিগ্রেশন ফর ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ' শিরোনামে এমটুকে ইপি টকস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এর আগে গ্লোবাল ইকোনমির ধস আমাদের তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। কিন্তু গত দশ বছরে অবস্থা অনেক পাল্টে গেছে। এখন যে কোনো গ্লোবাল ইস্যুর ইমপ্যাক্ট আমাদের ওপরেও পড়বে।
ইপি টকসে প্যানেলিস্ট হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাবেক বিদ্যুৎ সচিব পরিবেশ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. সুলতান আহমেদ, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও এনার্জিপ্যাকের সিইও হুমায়ুন রশীদ, অপারেশনাল একসিলেন্স বিশেষজ্ঞ ও আমেরিকা প্রবাসী শিক্ষাবিদ ড. হাবিব সিদ্দিকী, নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের অনারারী কনসাল ইঞ্জিনিয়ার শফিকুর রহমান ভূইয়া অনু, সামিট টেকনোপলিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা খান, অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্ন থেকে ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আবদুস সালেক সূফি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জলিল খান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালানা করেন এনার্জি এন্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশের বহু অভিজ্ঞ জনশক্তি পৃথিবীর অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তারা অনেকেই দেশের জন্যে কাজ করতে চান। এমন দক্ষ এনআরবি'দের নিয়ে দুবছর আগে একটা সম্মেলন হয়েছিল। তবে করোনার কারণে সম্মেলনের সুপারিশ বাস্তবায়ন কাজ ব্যাহত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জ্বালানি সক্ষমতা অর্জন করেছি। এখন এনার্জির সঙ্গে এনআরবি এক্সপার্টদের সংযোগ করা গেলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. সুলতান আহমেদ বলেন, এনআরবিদের বিশেষ যোগ্যতা রয়েছে। তারা দেশে ফিরে এসে কাজ করতে চান। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু আমরা বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে আছি। বিশেষ করে মেইনটেইনেন্সে। কোনো মেশিন নষ্ট হলে তা সোর্স দেশে পাঠাতে হয় বা সেখান থেকে এক্সপার্ট আনতে হয়। দেশেই এ ধরনের কাজ করা যায় কিনা তা খুঁজে দেখতে হবে।
হুমায়ুন রশিদ তার বক্তব্যে বলেন, প্রবাসী বিশেষজ্ঞ আর ব্যবসার মাঝে বন্ধন তৈরি করতে হবে। আমাদের জনসংখ্যা কাজে লাগাতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে, ধারা পাল্টাতে হবে। শিক্ষার্থীরা সমসাময়িক শিক্ষা পাচ্ছে না। আমরা শিক্ষিত বেকার তৈরি করছি। আমাদের ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট বিদেশে গ্রহণ করা হয় না।
আলোচনায় অংশ নিয়ে হাবিব সিদ্দিকী বলেন, এনআরবিরা সবাই নিজ নিজ পেশায় সফল। তাদের নিয়ে কাজ করা জরুরি। কারণ অদক্ষতা আমাদের অনেক ক্ষতি করে ফেলে। একদিনের কাজ করতে ৫ দিন লেগে যায়। সময় চলে গেলে এটা আর ফিরিয়ে আনা যায় না। ফলে আমরা দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছি না।
শফিকুর রহমান ভূইয়া বলেন, বিদেশি কনসালটেন্টের চাইতে আমাদের দেশের অনেক বিশেষজ্ঞ বেশি যোগ্য। আমাদের সবার আগে দরকার দেশপ্রেম, সততা এরপর দক্ষতা। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এমন মেগা প্রজেক্ট নিয়ে মতামত দেওয়ার যোগ্যতা তারা রাখেন। তবে অনেক সময় তাদের মতামত নেওয়া হয় না।
সালেক সূফি বলেন, এ দেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু উন্নয়নের ভিত্তিমূল তৈরি করে দিয়েছিলেন। বুয়েটে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, দেশের সম্পদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন করতে হলে আমাদের সোনার ছেলে দরকার।
- বিষয় :
- প্রবাসী বিশেষজ্ঞ