- বইমেলা
- বইমেলা ঘিরে নানা পণ্যের পসরা
বইমেলা ঘিরে নানা পণ্যের পসরা

মেলা প্রাঙ্গণে নানা পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা
মাটির পাত্র আগুনে পুড়ছে। পাশেই কেটলিতে রাখা হয়েছে বিশেষ মসলার দুধ–চা। ক্রেতার চাহিদা মতো জ্বলন্ত মাটির পাত্রে ঢালা হচ্ছে চা। আর চা ঢালার সঙ্গে সঙ্গে বের হচ্ছে ধোঁয়াটে সুন্দর গন্ধ।
মজার স্বাদের এই চা তন্দুরী চা নামেই পরিচিত। এমর একুশে গ্রন্থমেলার ভেতরে স্টল বসিয়ে এমন বাহারি চায়ের পসরা সাজিয়েছেন এক চা দোকানি। সেখানে শুধু তন্দুরি চা নয়, মিলছে চকলেট চা, খানদানি চা, তান্দুরি মালাই চা ও স্ট্রবেরি চা। দোকানি জানান, অন্যান্য চা থাকলেও তান্দুরি চা-ই বেশি বিক্রি তার দোকানে। এখানে এক কাপ তান্দুরি চায়ের দাম রাখা হচ্ছে ৪০ টাকা। সারাদিনে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার চা বিক্রি হয় তার দোকানে। তবে শুক্রবারে এই বিক্রি দাঁড়ায় ২০ হাজার টাকায়।
শুধু এই চা দোকানিই নয়, একুশের বইমেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এমন অনেক ভাসমান বিক্রেতাই বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসিয়েছেন বইমেলার ভেতরে-বাইরে। এদের মধ্যে কেউ ফুল বিক্রি করছেন,কেউ হস্তশিল্প, কেউ বা চুড়ি, কেউ খেলনা। অনেকে আবার আইসক্রিম, ডাব, আচারসহ বিভিন্ন পণ্যও বিক্রি করছেন। মেলায় বই বিকিকিনির সঙ্গে তাদের ব্যবসাও চলছে সমানতালে।
মেলা প্রাঙ্গণে কথা হলো ইগলু আইসক্রিমের এক বিক্রেতার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতিদিনই প্রায় ২০ হাজার টাকার আইসক্রিম বিক্রি হয় তাদের। তবে শুক্র-শনিবারে আয় হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। বইমেলায় এবারই তিনি প্রথম দোকান দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, পুরো মেলাতেই রয়েছে ইগলু আইসক্রিমের একাধিক স্টল। ২১ দিনের স্টল ভাড়া তিন লাখ টাকা। যা দিতে হবে বাংলা একাডেমিকে। তাদের এই দোকান বসেছে ২৫ তারিখ। দোকানভাড়া একদিনে ২০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ২২ শতাংশ লাভ রাখেন তারা।
মেলা প্রাঙ্গনে কথা হয় 'নড়াইল শখের রান্না ঘর' এর রাঁধুনি শারমিন সুলতানা সুমির সঙ্গেও। বইমেলায় এইবারই প্রথম স্টল দিয়েছেন তিনি। সুমি জানান, তাদের স্টলে রান্নার কাজে যারা সাহায্য করছেন তারা সবাই নারী। সুমির ভাষায়, বাজার এখন ভেজালে সয়লাব। ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে তারা আয়োজন করেছেন এই ঘরোয়া রান্নার।
হাজী বিরিয়ানীর স্টলের বিক্রিতা মাহবুবুল আলম জুয়েল জানান, তাদের স্থায়ী দোকান পুরান ঢাকায়। প্রতিদিন গড়ে বিক্রি হয় ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকার। আর শুক্র শনিবারে এই বিক্রি দাঁড়ায় এক থেকে দেড় লাখ টাকায়।
বইমেলাকে কেন্দ্র করে বাড়তি আয়-রোজগারের এমন সুযোগে খুশি এসব ভাসমান বিক্রেতারা। তবে কেউ কেউ আবার আক্ষেপের সুরে জানান, বিক্রি ভালো হলেও ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার পর হাতে খুব বেশি লাভ থাকে না।
এ বছর বইমেলা শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। তা চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন