অমর একুশে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়ার প্রতিবাদে কবিতা, গান, পথনাটক ও বক্তব্যে সংহতি প্রকাশ করেছেন লেখক, কবি, সাংবাদিক, নাট্যকার ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘বন্দী সময়ের চিৎকার’ হ্যাশট্যাগে আদর্শকে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ দেওয়ার দাবিতে ‘বসন্তকে গাইতে দিও গান’ শীর্ষক এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। আরও বক্তব্য রাখেন আদর্শ প্রকাশনীর সিইও মাহাবুবুর রহমান, লেখক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, লেখক ও গবেষক অনুপম দেবাশীষ রায়, শিল্পী অরূপ রাহী, উদীচি শিল্পী গোষ্ঠীর সহসভাপতি জামশেদ আনোয়ার তপন, কবি রহমান মফিজ, কবি সৈকত আমিন, কবি সজিব তুষার, আবৃত্তিশিল্পী দীপক সুমন গোস্বামী, গঞ্জে ফেরেশতা ব্যান্ডের ভোকালিস্ট সৈয়দ ফরহাদ। 

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মত প্রকাশের জায়গা সংকুচিত হতে হতে এমন পর্যায়ে এসেছে, একটি প্রকাশনী বইমেলায় স্টল পাচ্ছে না। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার স্বাধীন চিন্তাভাবনা বিরোধী। এই বিরোধিতার কারণ সৃজনশীলতার উৎপাদন হলে তা রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর হয়ে দাঁড়ায়। তারা অবিলম্বে একুশে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান।

সভায় জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘যে বইগুলোর কারণে আদর্শ প্রকাশনী স্টল পাচ্ছে না সে বইগুলো সরকার নিষিদ্ধ করেনি। মোসাহেবি ধরে রাখতে ও ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে বাংলা একাডেমি এজেন্ডা হাতে নিয়েছে। তারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি মোসাহেবি করতে করতে নিজেদের নজরে আনতে চায়। বাংলা একাডেমিও সেই কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানে কবি, প্রবন্ধকার, সাহিত্যিক ও গবেষক আছেন, তারা কীভাবে সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দিতে পারে? জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এরচেয়ে বড় লজ্জার বিষয় আর কী হতে পারে?’

মাহাবুব রহমান বলেন, ‘আদর্শ প্রকাশনী বইমেলায় স্টল না পাওয়ার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। আমরা স্টল পেলেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে আদর্শ প্রকাশনী ও ব্যক্তি হিসেবে আমার যে অবস্থান, সেই অবস্থান বা দাবি থেকে আমরা কখনোই সরে আসব না। যারা প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন তাদের ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তবে তারা নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে এখানে এসেছেন।’ মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও লেখকের লেখার স্বাধীনতার জায়গায় নিজেদের জাগ্রত থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অধিকারকর্মী মার্জিয়া প্রভার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দুই-একটি বক্তব্যের পর পর চলে গান ও কবিতা আবৃত্তি।