ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

বাংলায় প্রকৌশল শিক্ষা

ইউনিক স্কুলিং

বাংলায় প্রকৌশল শিক্ষা

অনেক স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে ইউনিক স্কুলিংয়ের

 মো. গোলাম রব্বানী 

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২৩:১৯

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনার গণ্ডি পাস করার পর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাকে ইংরেজিতে বলা হয় টারশিয়ারি লেভেল; যেটা বাংলায় ৩য় পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থা। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক এ শিক্ষায় তিন ভাগে ভর্তি সম্পন্ন হয় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং। তৃতীয় পর্যায়ের তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষাকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করে পড়ানোর জন্য ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। যেখানে সিংহভাগই ইংরেজি মাধ্যমের পড়াশোনা। কিন্তু বিপরীতে বাংলাদেশ এডুকেশন স্ট্যাটিস্টিকস ও সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে দেশের ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ভার্সিটির এ শিক্ষা ইংরেজি মাধ্যমে হওয়ায় অসংখ্য শিক্ষার্থীদের হুট করে ভাষাগত নতুন মাধ্যমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়। তাছাড়া দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গড়ে প্রতি ৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য কাজ করেন একজন শিক্ষক। যার কারণে ৭৪.৫১% ছাত্রছাত্রী শিক্ষকের সরাসরি সহায়তা পান না। যার ফলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক নানা জটিল সমস্যাগুলো সমাধানে ভাষাগত সমস্যা, শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ না থাকাসহ শিক্ষার্থীদের এসব সমস্যা সমাধান জরুরি হয়ে পড়ে। এ বিষয়েই কাজ করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একদল তরুণ। গড়ে তুলেছেন ‘ইউনিক স্কুলিং’ নামক একটি অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম। 
‘উচ্চশিক্ষা হোক মাতৃভাষা বাংলায়’ স্লোগান নিয়ে চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফাহিম উদ্দিন আর নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জেরিন সুলতানা এমন উদ্যোগ নিয়ে ২০২০ সালের ২ এপ্রিল ‘ইউনিক স্কুলিং’ প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে এ দু’জন কাজ শুরু করলেও, তাদের সঙ্গে সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আছেন জহিরুল ইসলাম ফাহিম। চুয়েট, বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ সদস্যের কার্যনির্বাহী দল তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। 
প্রকৌশল শিক্ষার বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন কোর্সগুলোর ভিডিও লেকচার তৈরি করেন তারা। এরপর বিনামূল্যে ইউটিউব ও ফেসবুকের মাধ্যমে সরবরাহ করা শুরু করেন। সময়ের পরিক্রমায় শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী ‘ইউনিক স্কুলিং’ প্রিমিয়াম কোর্সের সঙ্গে সঙ্গে এক্সপ্লেইনার বুক ও এক্সপার্ট হেল্প প্রদান করা শুরু করে। এক্সপার্ট হেল্প ইউনিক স্কুলিং এমন একটি ফিচার; যা শিক্ষার্থীদের হোম টিউটরের মতো সুবিধা দেবে।
বর্তমানে ইউনিক স্কুলিং ফেসবুক, ইউটিউব ও ওয়েবসাইট মোট ২০ হাজার শিক্ষার্থীদের প্রকৌশল শিক্ষা বাংলায় প্রদান করে আসছে। এদিকে ইউনিক স্কুলিং স্টুডেন্ট ফর স্টার্টআপ ও বাংলাদেশ সরকারের আইডিয়া প্রকল্পের একটি প্রজেক্ট স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চ-প্যাডের স্টার্টআপ প্রশিক্ষণ ও শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্বাচিত হয়। ইউনিক স্কুলিং নিয়ে জেরিন সুলতানা বলেন, ‘শেখার জন্য সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হলো নিজের মাতৃভাষা। যার কারণে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশগুলো তাদের নিজেদের ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে পাঠদান করে থাকে। নিজের ভাষায় উচ্চশিক্ষা পেলে শিক্ষার্থীরা যেমন তাদের বিষয়বস্তু ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারবে, সঙ্গে গবেষণাও ত্বরান্বিত হবে।’ v
 

আরও পড়ুন

×