সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন। তবে কেন তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার কারণ তিন দিনের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

ফেসবুক লাইভে ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান সুজন বলেন, ‘আমার আত্মহত্যার কারণ পারিবারিক নয়, পারিবারিকভাবে আমি সুখে আছি। কিন্তু এমন অবস্থায় পড়েছি যে, নিজের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কিছু বলতে পারছিনা। আমার আত্মহত্যার কারণ রুটি-রুজি বন্ধ হওয়া। যে জায়গার আয়ে আমার সংসার চলতো, সেই পথ শনিবার থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ওই জায়গা হারিয়ে ফেলব কাল (শনিবার)। তাই কোনো উপায় না পেয়ে আমাকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে।’ 

ফেসবুক লাইভের দুই ঘণ্টা আগে সুজন তার টাইমলাইনে লেখেন, ‘কাল (শনিবার) হয়তো আত্মহত্যা করতে পারি, কারণটা ডায়রিতে লেখা থাকবে ... হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও ...।’

এই পোষ্টটি তিনি সাতজনকে ট্যাগ করেন। যাদের ট্যাগ করেছেন তারা হলেন- বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল, মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মইনুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সুমন সেরনিয়াবাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত-উল-ইসলাম সুমন এবং চরকাউয়া ইউপি সদস্য সাগর হোসেন ও মাহাতাব হোসেন সুমন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া বাস টার্মিনালের একটি অংশ ও চরকাউয়া খেয়াঘাট নিয়ন্ত্রণ করেন আশিকুর রহমান সুজন। এই দুই জায়গার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ ও মহানগর ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে সম্প্রতি তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ফলে চরকাউয়া বাস টার্মিনাল ও খেয়াঘাটের নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কায় পড়েন তিনি। এ কারণে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দিয়েছেন বলে ধারণা অনেকের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশিকুর রহমান সুজন শনিবার দুপুরে সমকালকে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ওই ঘোষণা দিয়েছিলাম। এর সঙ্গে পারিবারিক বা রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই। তবে চরকাউয়া বাস টার্মিনাল ও খেয়াঘাটের নিয়ন্ত্রণ হারানোর অভিযোগ সত্য নয়। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সুমন সেরনিয়াবাত বলেন, শনিবার দুপুরে আশিকুর রহমান সুজনকে ডাকা হয়। এ জন্য তাকে তিরস্কারও করা হয়েছে। একই সঙ্গে লিখিতভাবে ঘটনার কারণ জানাতে বলা হয়েছে।