ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

রাজধানীতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মীর মৃত্যু, নানা প্রশ্ন

রাজধানীতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মীর মৃত্যু, নানা প্রশ্ন

প্রতীকী ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২২ | ১২:১৬ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২২ | ১২:১৬

রাজধানীর পূর্ব কাজীপাড়া এলাকায় মোছা. তানিয়া (২২) নামে এক গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভবনের ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে দাবি করছে গৃহকর্তার পরিবার। তবে স্থানীয়রা বলছেন, তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা হয়েছে। অথবা হত্যার পর তাঁর লাশ ওপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়। অবশ্য পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কাফরুল থানার ওসি হাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।

পুলিশ ও গৃহকর্তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব কাজীপাড়ার মাদ্রাসা রোডের ৩০৪ নম্বর বাড়ির সপ্তম তলায় হাসানুজ্জামান রেজার বাসায় কাজ করতেন তানিয়া। তিনি প্রায় ১৪ বছর ধরে এই পরিবার ও তাঁদের আত্মীয়দের বাসায় কাজ করে আসছিলেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামে। শুক্রবার মাগরিবের আজানের পর হঠাৎ ভারী কিছু পতনের আওয়াজ পাওয়া যায়। পরে বাসার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন লোকজন। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, তানিয়ার ডান হাত কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাঁর মাথা ও মুখে থেঁতলানো জখমের চিহ্ন ছিল।

হাসানুজ্জামানের পুত্রবধূ কানিজ ফাতেমা জানান, ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে তানিয়ার মৃত্যু হয়েছে। কী কারণে তিনি লাফ দিয়েছেন, সেটি কারও জানা নেই। তবে শুক্রবার মাগরিবের আজানের পর তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদের দিকে উঠে যান। সন্দেহ হওয়ায় তাঁর পিছু নেন কানিজ ফাতেমা। তিনি যখন ছাদের সিঁড়িঘরের দরজায় পৌঁছান, তখন তানিয়া রেলিংয়ের ওপর উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। আটকানোর আগেই তিনি লাফ দেন।

গৃহকর্তার পরিবারের দাবি, তানিয়া দেড় বছর ধরে কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তবে তাঁর 'আত্মহত্যা'র কারণ সম্পর্কে তাঁরা বা পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি।

এদিকে, এ ঘটনার পর স্থানীয় কিছু লোক ওই বাসার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, তানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, গৃহকর্তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি ছাদ থেকে লাফ দেন।

পুলিশ বলছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সব অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অবশ্য হাসানুজ্জামান রেজার দাবি, দীর্ঘদিন কাজ করায় তানিয়া ছিলেন তাঁদের পরিবারের সদস্যের মতো। তিনি গ্রামের বাড়িতেও বিশেষ যেতেন না। পরিবারের কারও সঙ্গে তাঁর তেমন যোগাযোগ ছিল না। তাঁর সার্বিক ভরণ-পোষণ দিত গৃহকর্তার পরিবার।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, গৃহকর্তার পরিবারের লোকজনই তানিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন

×