‘গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আতঙ্ক’

সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১১:২৪ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১১:২৫
গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। আইনটি সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনেও হুমকি সৃষ্টি করছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে ‘আমরা গণমাধ্যমকর্মী’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। আরটিভির সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবাদে এ মানববন্ধন হয়।
রাজারবাগ দরবার শরিফ ও এর নেতা শাকেরুল কবিরের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারের পর চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিন ও তার সোর্সের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘এই আইনটি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন হবে। এমনকি আইনমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, কোথাও কোনো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা হলে, তিনি সেই মামলা পরিচালনা করবেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি মামলাও তিনি পরিচালনা করেননি। আইনমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, তদন্তের পর মামলা মামলা হবে। কিন্তু অধরার ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি।’
ডিইউজে সভাপতি আরও বলেন, ‘যেদিন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংসদে উত্থাপিত হয়, সেদিন মোস্তাফা জব্বার (ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী) বলেছিলেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি করা হয়েছে।’
দেশের গণমাধ্যম সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে সরকারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সাংবাদিকনেতা আরও বলেন, ‘দেশের গণমাধ্যম এই অর্থে স্বাধীনতা ভোগ করছে যে, আগে চ্যানেল ছিল ১টি বা ২টি, সেখানে এখন ৪০টি চ্যানেল। সংবাদপত্র ১ হাজার ২০০–এর বেশি। সংখ্যার দিক থেকে স্বাধীনতা ভোগ করছে। কিন্তু গুণ ও মানের দিক থেকে এখনো সংকোচন নীতি চলছে।’
সাংবাদিকদের সব সময় নিপীড়ন–নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে বলে জানান সোহেল হায়দার।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী জানান, রাজারবাগের পীর এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই পীরের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। যারা ক্ষমতায় থাকেন, তারাই গণমাধ্যমের বেলায় ও সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে এক ও অভিন্ন। আর বিরোধী দলে থাকলে স্বাধীনতার কথা বলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক সব কালাকানুন বাতিল ও অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। রাজারবাগের পীর ও তার মুরিদদের নানা অপকর্মের সংবাদ সামনে এলেও তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এবং প্রশাসন কেন তার ব্যাপারে নীরব, সে প্রশ্ন তোলা হয় মানববন্ধনে। ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা, ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব, ল রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র্যাক), আরটিভি, বাংলাভিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকেরা।