শাহজালালে ২৫ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার
বিভাগীয় মামলাতেই থেমে তদন্ত, জড়িতরা অধরা
স্কচটেপে মোড়ানো ডিম্বাকৃতির স্বর্ণ পেস্ট
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৩ | ০৬:৩৩ | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩ | ০৬:৩৩
ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে গত ১৬ জুলাই একটি এয়ারক্রাফট থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২৫ কেজি স্বর্ণ জব্দ করেন শুল্ক ও অন্যান্য গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা না হলেও ঢাকা কাস্টমসে একটি বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তবে এই মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। এমনকি জানা যায়নি স্বর্ণ আনার পেছনে কারা জড়িত। একই দিন অপর ঘটনায় প্রায় সাড়ে ৩ কেজি স্বর্ণসহ তিন যাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রিভেনটিভ) আবদুল্লাহ আল মাসুম ৩ জনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। সে মামলার তদন্তও চলছে ঢিমেতালে।
শুধু এ দুটি ঘটনাই নয়, অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময় মালিকানাবিহীন অবৈধ স্বর্ণের চালান উদ্ধারের ঘটনায় শুল্ক গোয়েন্দারা বিভাগীয় মামলা করেই দায়িত্ব শেষ করেন। এমন বহু মামলার তদন্ত দিনের পর দিন ঝুলে থাকায় শেষ পর্যন্ত অধরা থেকে যায় চোরাচালানের নেপথ্যের লোকরা। শুল্ক কর্মকর্তাদের দাবি, অনেক ঘটনায় থানায় মামলা করলেও শুধু বাহক ছাড়া পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাই তারা বিভাগীয় মামলা করে নিজেরাই তদন্ত করেন। তবে পুলিশের দাবি, কাস্টমসের পক্ষ থেকে থানায় মামলা বা অভিযোগ না করার কারণে চোরাচালানের নেপথ্যের নায়কদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
ঢাকা কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার সৈয়দ মোকাদ্দেশ হোসেন সমকালকে জানান, ২৫ কেজি স্বর্ণ উদ্ধারের ঘটনার বিভাগীয় মামলা তদন্তে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। জব্দ স্বর্ণ ডিএমএ কাস্টমসের গোডাউনে আটক রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় অবৈধ স্বর্ণসহ অনেককে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়। কিন্তু দেখা যায়, মামলার তদন্তে একমাত্র বাহক ছাড়া জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না।
এদিকে সাড়ে ৩ কেজি স্বর্ণ উদ্ধারের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার এসআই সফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার তিনজন হলেন– মসিউর রহমান রুবেল, জাহাঙ্গীর আলম এবং আকবর হোসেন জোমাদ্দার। তাদের আদালতের মাধ্যমে ২ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেছেন, পার্শ্ববর্তী একটি দেশে পাচারের জন্য দুবাই থেকে তাঁরা ওই স্বর্ণ এনেছিলেন। দুবাইতে রাসেল নামে এক ব্যক্তি তাদের স্বর্ণগুলো দেয়। তারা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্বর্ণগুলো বহন করতে রাজি হন। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বিমানবন্দর থানার ওসি আজিজুল হক মিয়া বলেন, প্রায় সাড়ে ৩ কেজি স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার তিন আসামির দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশে স্বর্ণগুলো পাচারের বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত চলছে।