ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

বোনের বিয়েটা দেখা হলো না রোহানের

বোনের বিয়েটা দেখা হলো না রোহানের

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ১৯:১৪

মাত্র ১৮ দিন পরই তানজিল হাসান রোহানের আদরের ছোট বোন তানজিলা হাসান রিহার বিয়ে। বড় ভাই হিসেবে সেই আয়োজনে নানা কেনাকাটায় পরিবারকে সহায়তা দিয়ে আসছিলেন রোহান। একমাত্র বোনের বিয়ের আয়োজনটা জাঁকজমকপূর্ণ করতে নিজের মোটরবাইক নিয়ে প্রতিনিয়তই ছোটাছুটি করছিলেন তিনি। বুধবার রাতেও চার বন্ধুকে নিয়ে চকবাজারে কেনাকাটায় বেরিয়েছিলেন। কিন্তু চুড়িহাট্টার আগুন থামিয়ে দিয়েছে দুরন্ত রোহানোর ছোটাছুটি। সেই আগুনে তিন বন্ধু দগ্ধ হলেও সিয়াম আরাফাত নামে এক বন্ধুর লাশ পাওয়া গেছে। অবশ্য গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রোহানের লাশের সন্ধান মেলেনি।

পুরান ঢাকার আগামাসিহ লেনের বাসিন্দা হাসান খানের ছেলে রোহান নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র ছিলেন। তার বন্ধু আরাফাত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের 'এ' লেভেলের শিক্ষার্থী। কাজী আলাউদ্দিন রোড সংলগ্ন আগা মসজিদ এলাকায় তার বাসা। তারা দু'জন একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন। অপর তিন বন্ধু মাইনুল ইসলাম লাবিব, রমিজ ও সোহাগ ছিলেন অপর একটি মোটরসাইকেলে। তারা বেঁচে ফিরেছেন।

ওই তিনজনকে উদ্ৃব্দত করে স্বজনরা বলছিলেন, কেনাকাটার আগে পাঁচ বন্ধু মিলে চুড়িহাট্টা মোড়ে রাজমহল হোটেলে খেতে গিয়েছিলেন। যানজট এড়িয়ে তিন বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে এগিয়ে গেলেও রোহানের বাইকটি আটকে যায়। তখনই বিস্ম্ফোরণ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর কিছু মনে নেই তাদের।

রোহানের চাচাতো ভাই মামুন খান বলেন, ১০ মার্চ রোহানের একমাত্র বোনের বিয়ের দিন ঠিক করা রয়েছে। এ নিয়ে পুরো পরিবারে আনন্দ চলছিল। বুধবারের আগুন সব থামিয়ে দিয়েছে। আগামাসিহ লেনে এখন শুধুই শোক। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত রোহানের লাশটিও পাননি তারা।

গতকাল মর্গের সামনে আগামাসিহ লেনের বাসিন্দা ওয়াজেদ জানান, রোহান আর আরাফাতের সঙ্গে তার ভাগ্নে লাবিবও ছিল। লাবিবের মাথার সামান্য অংশ পুড়লেও বেঁচে গেছে। তবে আতঙ্ক তাড়া করছে।

রোহানের বাবা হাসান খানও ছিলেন মর্গের সামনে। তিনি বিলাপ করে মাটিতে শুয়ে পড়ছিলেন বারবার। শুধু বলছিলেন, তিনি ছেলের লাশ না নিয়ে বাসায় ফিরবেন না। তখন মর্গের সামনে রোহানের ছবি নিয়ে বিলাপ করছিলেন আরও কয়েকজন স্বজন।

আরও পড়ুন

×