অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে মরণেও থাকলেন রিফাত
মোক্তার হোসেন
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ১৯:১৮
রিফাত আর রিয়া। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের পর প্রেম। পুরো জীবন একসঙ্গে কাটিয়ে
দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে বছর দুই আগে বিয়ে করেন তারা। কথা রেখেছেন রিফাত-রিয়া!
শেষ পর্যন্ত দু'জন আলিঙ্গন করেই মরেছেন। বুধবার রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারে
আগুনে একসঙ্গে দগ্ধ হয়ে নিহত হন তারা। অবশ্য গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল
পর্যন্ত তাদের লাশের সন্ধান মেলেনি। আগুনে পুড়ে যাওয়া ওয়াহেদ ম্যানশনের
তৃতীয় তলায় এ দম্পতি ভাড়া থাকতেন। রিয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে স্বজনরা
জানিয়েছেন। স্বজনরা বলছিলেন, আগুন লাগার সময় দু'জনই বাসায় ছিলেন। তারা বের
হওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা রিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায়
সিঁড়ি বেয়ে আর নামতে পারেননি। এতে রিফাতও স্ত্রীকে ছেড়ে নেমে আসেননি।
এ দম্পতির বন্ধু আল-আকসার সাজিদ গতকাল মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, হয়তো
রিফাত বেঁচে যেতে পারতেন; কিন্তু তিনি ভালোবাসার প্রমাণ দিয়েছেন। মরণের শেষ
সময়টা পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গেই ছিলেন। একসঙ্গে জীবনের জুটি বেঁধে চলে গেছেন
একসঙ্গেই।
সাজিদ বলেন, আগুন লাগার পর রিফাতের পরিবারের সঙ্গে ফোনে তার কথা হয়েছিল।
কিন্তু রিয়াকে নিয়ে নামতে পারছিলেন না বলেই তিনি নিজেও নামেননি। এমন
পরিস্থিতির পর পুরো পরিবারটিও শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বন্ধুরাই এখন রিফাত ও
রিয়ার লাশ খুঁজছেন।
সেখানে থাকা তাদের আরেক বন্ধু বলেন, ভবনে যখন আগুন লাগে, তখন ফোনে কয়েক দফা
রিফাতের সঙ্গে স্বজনরা কথা বলেছেন। রিফাত শুধু বলেছেন, বের হওয়ার চেষ্টা
করছেন; কিন্তু রিয়াকে নিয়ে বের হওয়া যাচ্ছে না। ধোঁয়া ও অন্ধকারে কিছু
দেখা যাচ্ছে না। রাত ১২টার পর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা বলছেন, ওয়াহেদ ম্যানশনটি আগুনে পুরো
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ভবনে তল্লাশি চালিয়ে অনেকের অঙ্গার হয়ে যাওয়া লাশ
উদ্ধার করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষও বোঝা যায়নি।