ঢাকা বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

সাপের দংশনে বাবার পর প্রাণ গেল মেয়ের

সাপের দংশনে বাবার পর প্রাণ গেল মেয়ের

প্রতীকী ছবি

হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:১৭ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:১৭

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে সাপের দংশনে মারা গেছে আছিয়া খাতুন (১২) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী। সোমবার ভোরে ঘরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তাকে সাপে দংশন করে। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে বিকেলে সে মারা যায়। আছিয়া উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত. আব্দুল্লার মেয়ে। 

আছিয়ার বাবা আব্দুল্লাও গত ২৫ জুলাই গ্রামের খালে পাট জাগ দেওয়ার সময় সাপের দংশনে মারা যান বলে জানা গেছে। কিশোরীর মৃত্যুর বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, চিকিৎসকরা সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করতে না পারায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে চিকিৎসকদের দাবি, আছিয়ার শরীরে সাপের দংশনের লক্ষণ ছিল না। স্বজনরাও বিষয়টি জানাননি।

রাজু আহাম্মেদ নামে গ্রামের এক যুবক দাবি করেন, সোমবার ভোরে সাপে দংশনের পর আছিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা চিকিৎসা না দিয়ে তাকে কুষ্টিয়ায় পাঠিয়ে দেন। সেখানেও সঠিক চিকিৎসা হয়নি।

মঙ্গলবার আছিয়াদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় লাইলা খাতুন নামে এক স্বজনের সঙ্গে। তিনি জানান, যদি আছিয়াকে সাপের দংশনের ইনজেকশন (অ্যান্টিভেনম) দেওয়া হতো তাহলে তার মৃত্যু হতো না। চিকিৎসক বলেছেন, তার শরীরে দংশনের লক্ষণ নেই। কিন্তু রাতে মরদেহ জানাজার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় বিছানা থেকে একটি কালাচ সাপ বের হয়। সেটিকে মেরে ফেলেছেন। এ সাপই তাকে দংশন করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছিয়ার চিকিৎসা দিয়েছেন চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, অচেতন অবস্থায় কিশোরীকে আনা হয়। শরীরে সাপের দংশনের চিহ্ন ছিল না, স্বজনও বলেনি। রোগীর খিচুনি ছিল। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুষ্টিয়ায় রেফার করা হয়।

সাপে কাটা রোগীদের জন্য কাজ করেন আব্দুল্লাহ মারুফ নামে এক সমাজকর্মী। তিনি তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, মেয়েটি রাতে বুঝতে পারেনি কখন তাকে সাপে কেটেছে। সকালে শরীরে ব্যথা অনুভব করে এবং বমি বমি ভাব হয়। পরে স্বজনদের জানালে তারা তাকে প্রথমে ওঝার কাছে এবং পরে হাসপাতালে নেয়।

মারুফের ভাষ্য, রোগীর স্বজনরা স্পষ্ট করে সাপে কাটার কথা বলতে না পারায় এবং শরীরে ক্ষত না থাকায় চিকিৎসকরা হয় চিকিৎসা করেননি অথবা ঝুঁকি নেননি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিভেনম আছে। তাঁর নিজের কাছেও রয়েছে। কিন্তু খবর না পাওয়ায় তিনি যেতে পারেননি। দংশনের শিকার রোগীদের চিকিৎসায় দ্বিধা রয়েছে চিকিৎসকদের মধ্যে। এ বিষয়ে তাদের দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জামিনুর রশিদ বলেন, মেয়েটিকে চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে রেফার করা হয়েছিল। চিকিৎসকরা দক্ষতার সঙ্গে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসা দেন।



whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×