সংক্রামক ব্যাধি করোনাভাইরাস যে তাপমাত্রায় সংক্রমণ ছড়াতে পারে না, বৈশ্বিক তাপমাত্রা কখনও সেই পর্যায়ে কখনও পৌঁছায়নি। সুতরাং তামপাত্রার সঙ্গে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কোন সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন সরকারের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

সোমবার করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনাভাইরাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় টিকতে পারে না। কিন্তু কোন দেশেই এত বেশি তাপমাত্রা নেই। তাই গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রায় করোনাভাইরাস কমে, এমন ভরসার কথা ভাবা যাবে না। বছর জুড়েই এই ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সুতরাং সবাইকে সচেতন হতে হবে।

চীনের বাইরে গত দুই দিনে করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ছে জানিয়ে পরিচালক বলেন, এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আবারও চীনকে অধিকরত পর্যবেক্ষণ করছে। চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান এবং ইতালিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ইউরোপের যেসব দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে, সেসব দেশে ইতালি থেকে যাওয়া মানুষই বেশি। ইতালিই সেখানে মূল সেন্টার হিসেবে কাজ করেছে।

করোনা সংক্রমিত দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারান্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, সংক্রমণ ছড়ানো দেশ থেকে আসা ব্যক্তি যদি আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে গিয়ে থাকেন, তাহলে তার মধ্যে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। করোনাভাইরাস শরীরে প্রবেশের ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই সময়ে যাদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাদের আইসোলেশনে নিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু যাদের শরীরে কোন উপসর্গ নেই, তাদেরও বাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধভাবে চলাফেরার অনুরোধ করছি। সম্ভব হলে তারা একটি ঘরে থাকবেন। প্রয়োজন না হলে বাসার বাইরে যাবেন না। আবার বাসার বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করবেন।

সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আক্রান্ত বাংলাদেশিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে আক্রান্তদের মধ্যে দুই জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। আরও তিন জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অন্য দু'জনকে যে কোনো সময় ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এছাড়া আরব আমিরাতে আক্রান্ত ব্যক্তির বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাস সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছে।

দেশে এখনও করোনা আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে ডা. ফ্লোরা বলেন, এ পর্যন্ত ৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মেলেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।