- রাজধানী
- সাবধান, 'শান্তি'র ভয়ংকর ফাঁদ
গৃহকর্মী পরিচয়ে অজ্ঞান পার্টির চক্র
সাবধান, 'শান্তি'র ভয়ংকর ফাঁদ

২০১৬ সালের আগস্টে রাজশাহী শহরের রাজপাড়া এলাকার বাসিন্দা অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান মারা যান। তার বাসায় কাজ করতেন 'শান্তি' নামে এক গৃহকর্মী। ওই গৃহকর্মী খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে হান্নান ও তার স্ত্রী সেলিনা হান্নানকে অচেতন করেছিলেন। এরপর ওই বাসা থেকে প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে তিনি চম্পট দেন। হাসপাতালে দু'দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে যান হান্নান। ওই যাত্রায় বেঁচে যান তার স্ত্রী। একই বছরে তিন মাসের ব্যবধানে রাজশাহীতে আরও তিনটি বাসায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে। সব বাসায় গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে অজ্ঞান করে জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়া হয়। তিনটি ঘটনায় রাজশাহীতে পৃথক তিনটি মামলা হলেও পুলিশ 'শান্তি' নামে ওই গৃহকর্মীকে খুঁজে পাচ্ছিল না। দীর্ঘ চার বছর পর চলতি বছরের ১০ মার্চ রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকার একটি বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দিয়ে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে বাসার লোকজনকে অজ্ঞান করে ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে একটি ভয়ংকর চক্রের সন্ধান মিলেছে। গৃহকর্মী পরিচয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর এলাকায় বাসাবাড়িতে ঢুকে খাবারের সঙ্গে ক্লোরনসহ অন্যান্য চেতনানাশক মিশিয়ে স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এই চক্রের মূল হোতা 'শান্তি' পরিচয়দানকারী ওই গৃহকর্মী। যদিও তার আসল নাম বিউটি বেগম। তবে একেক জায়গায় তিনি একেক নামে পরিচয় দিতেন- কোথাও 'ময়না' আবার কোথাও 'জান্নাতের মা'। তবে অধিকাংশ জায়গায় তিনি পরিচয় দিতেন 'শান্তি' হিসেবে। চার বছর আগের রাজশাহীর ঘটনাগুলোর তদন্তে কোনো কিনারা করতে পারছিল না পুলিশ। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে গৃহকর্মী পরিচয় দেওয়া 'শান্তি'র ছবি পেলেও তাকে গ্রেপ্তার তো দূরে থাক, আসল নাম-ঠিকানা ও পরিচয় বের করতে পারেনি তারা। তাই রাজশাহীর ঘটনায় দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিল পুলিশ। দীর্ঘদিন পর 'শান্তি' পরিচয় দেওয়া গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তারের পর এখন নতুনভাবে রাজশাহীর ঘটনায় দায়ের করা তিন মামলার তদন্ত শুরু হবে।
যেভাবে গ্রেপ্তার সেই শান্তি :গত ৯ মার্চ গেন্ডারিয়ার ২৮/বি সতীশ সরকার রোডের তৃতীয় তলার একটি বাসায় 'জান্নাতের মা' পরিচয়ে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে ঢোকেন বিউটি বেগম। বাসার দারোয়ানদের মাধ্যমে ওই বাসায় কাজে নেন তিনি। পরদিন দুপুরের খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ট্যাবলেট মেশান ওই গৃহকর্মী। এরপর ওই বাসার বাসিন্দা ফয়জুন্নেছা, ফরিদা ইয়াসমিন ও গোলাম মাওলা দুলাল অজ্ঞান হয়ে পড়লে ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান ওই গৃহকর্মী। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। 'জান্নাতের মায়ের' আসল নাম ও ঠিকানা কিছুই বাড়ির বাসিন্দাদের কাছে ছিল না। শুধু তারা মোবাইলে ওই গৃহকর্মীর একটি ছবি তুলে রেখেছিলেন। পরে পুলিশ একাধিক সোর্সের মাধ্যমে তথ্য পায়- গেন্ডারিয়ার বাসায় যে গৃহকর্মীর ছবি তোলা হয়; তার মতো একজন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া এলাকায় বসবাস করেন। এরপর ১৪ মার্চ ইকুরিয়ায় অভিযান চালিয়ে ওই গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিউটি বেগম স্বীকার করেন গেন্ডারিয়ার বাসায় তিনি স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করেছিলেন। দেশব্যাপী তার এই চক্রে আরও তিনজন রয়েছেন। তারা হলেন বিউটির স্বামী খোরশেদ আলম ওরফে মোরশেদ, বিউটির প্রতিবেশী রিপনা বেগম ও তার স্বামী ফারুক আহমেদ।
জুরাইনে তাৎক্ষণিক আরেকটি ঘটনা নস্যাৎ :পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বিউটি বেগম জানান, ওই দিনই জুরাইনের একটি বাসায় একই ধরনের ঘটনার পরিকল্পনা রয়েছে তার সহযোগী রিপনার। ওই বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করে ১৪ মার্চ দুপুরেই সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। কাকতালীয়ভাবে পুলিশ জুরাইনে ওই বাসার অদূরে গলি থেকেই গ্রেপ্তার করে রিপনাকে। খাবারের সঙ্গে ক্লোরন ট্যাবলেট মিশিয়ে বাসার সবাইকে অজ্ঞান করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে মাত্রই পালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
যেভাবে বেরিয়ে এলো রাজশাহীর কাহিনি :গৃহকর্মী বেশে অজ্ঞান পার্টির এই চক্রকে গ্রেপ্তারের পর তাদের ছবি ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউজপোর্টাল ও ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়। সেখানে বিউটির ছবি দেখে রাজশাহী থেকে একজন ভুক্তভোগী পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান- ছবিতে বিউটি নামে যিনি রয়েছেন, তিনি ২০১৬ সালে তাদের বাসার লোকজনকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে পালিয়েছিলেন। তাদের কাছে ওই গৃহকর্মীর ছবি থাকলেও দীর্ঘ দিনেও তার খোঁজ দিতে পারছিল না পুলিশ। রাজশাহী থেকে ওই ক্লু পাওয়ার পর এ ব্যাপারে বিউটিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তিনি স্বীকার করেন- শুধু রাজশাহী নয়, দেশের আরও অনেক এলাকায় একইভাবে বাসার বাসিন্দাদের অজ্ঞান করে লাখ লাখ টাকার মূল্যবান জিনিস হাতিয়েছেন তারা।
তিন ব্যাংকারের বাসায় হানা :রাজশাহীর রাজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হান্নানের ছেলে ইমন আলী জানান, ২০১৬ সালে হঠাৎ একদিন তাদের বাসার গেটে এসে 'শান্তি' পরিচয়দানকারী এক মধ্যবয়সী নারী কাজের জন্য কান্নাকাটি করছিলেন। এটা দেখে তার বাবা হান্নানের মন গলে যায়। তিনি ওই নারীকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন। তার ভোটার আইডি ও অন্যান্য পরিচয়পত্র চাইলে কয়েকদিনের মধ্যে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কাজে যোগ দেওয়ার চতুর্থ দিনের মাথায় সকালের নাশতার সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে হান্নান ও তার স্ত্রী সেলিনা হান্নানকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার ও টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। পরে হাসপাতালে দু'দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর হান্নান মারা যান। এ ঘটনা জানাজানি হলে হান্নানের পরিবার জানতে পারে রাজশাহীতে তিন মাসের ব্যবধানে একই ধরনের আরও দুটি ঘটনা ঘটেছে। একটি ঘটে উপশহরের বোয়ালিয়া থানা এলাকায় সোহাগদের বাসায়। আরেকটি ঘটে শাহমখদুম থানা এলাকায়। কাকতালীয়ভাবে তিন বাসার গৃহকর্তাই ব্যাংকার।
ইমন আরও জানান, ওই গৃহকর্মী নিজেকে পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। সোহাগদের বাসায় কাজে যোগদানের সময় গৃহকর্মীর একটি ছবি তুলে রাখা হয়। পরে তারা মিলিয়ে দেখেন ওই গৃহকর্মীই তাদের বাসায় হানা দেন। গেন্ডারিয়া পুলিশ গ্রেপ্তারের পর স্বশরীরে গিয়ে ওই গৃহকর্মীকে তিনি শনাক্ত করেন। স্থানীয় পুলিশের অসহযোগিতায় গৃহকর্মীর ছবি থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পরে ২০১৯ সালে সিআইডি মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য :পুলিশের ওয়ারী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হান্নানুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এই চক্রের সদস্যরা ২০১৩ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় একই ধরনের অপরাধ করে আসছেন। তারা বেশি দিন এক জায়গায় বসবাস করেন না। মোহাম্মদপুরে এক বিচারকের বাসায় এ চক্রের সদস্যরা অপারেশন চালিয়েছিলেন। এ ছাড়া ডেমরা ও পুরান ঢাকার একাধিক বাসা থেকে তারা স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করেন। লুট করা স্বর্ণ তারা তাঁতীবাজারের 'এফ আর গোল্ড হাউসে' বিক্রি করতেন। ওই গোল্ড হাউসের কর্ণধার ফারুক আহমেদকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হান্নানুল ইসলাম আরও বলেন, চেতনানাশক ট্যাবলেটের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে ভিকটিম মারা যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়া গৃহকর্মী, বাসার নিরাপত্তারক্ষী ও গাড়িচালককে চাকরি দেওয়া হলে বড় ধরনের বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকবে।
যেভাবে গ্রেপ্তার সেই শান্তি :গত ৯ মার্চ গেন্ডারিয়ার ২৮/বি সতীশ সরকার রোডের তৃতীয় তলার একটি বাসায় 'জান্নাতের মা' পরিচয়ে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে ঢোকেন বিউটি বেগম। বাসার দারোয়ানদের মাধ্যমে ওই বাসায় কাজে নেন তিনি। পরদিন দুপুরের খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ট্যাবলেট মেশান ওই গৃহকর্মী। এরপর ওই বাসার বাসিন্দা ফয়জুন্নেছা, ফরিদা ইয়াসমিন ও গোলাম মাওলা দুলাল অজ্ঞান হয়ে পড়লে ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান ওই গৃহকর্মী। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। 'জান্নাতের মায়ের' আসল নাম ও ঠিকানা কিছুই বাড়ির বাসিন্দাদের কাছে ছিল না। শুধু তারা মোবাইলে ওই গৃহকর্মীর একটি ছবি তুলে রেখেছিলেন। পরে পুলিশ একাধিক সোর্সের মাধ্যমে তথ্য পায়- গেন্ডারিয়ার বাসায় যে গৃহকর্মীর ছবি তোলা হয়; তার মতো একজন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া এলাকায় বসবাস করেন। এরপর ১৪ মার্চ ইকুরিয়ায় অভিযান চালিয়ে ওই গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিউটি বেগম স্বীকার করেন গেন্ডারিয়ার বাসায় তিনি স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করেছিলেন। দেশব্যাপী তার এই চক্রে আরও তিনজন রয়েছেন। তারা হলেন বিউটির স্বামী খোরশেদ আলম ওরফে মোরশেদ, বিউটির প্রতিবেশী রিপনা বেগম ও তার স্বামী ফারুক আহমেদ।
জুরাইনে তাৎক্ষণিক আরেকটি ঘটনা নস্যাৎ :পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বিউটি বেগম জানান, ওই দিনই জুরাইনের একটি বাসায় একই ধরনের ঘটনার পরিকল্পনা রয়েছে তার সহযোগী রিপনার। ওই বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করে ১৪ মার্চ দুপুরেই সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। কাকতালীয়ভাবে পুলিশ জুরাইনে ওই বাসার অদূরে গলি থেকেই গ্রেপ্তার করে রিপনাকে। খাবারের সঙ্গে ক্লোরন ট্যাবলেট মিশিয়ে বাসার সবাইকে অজ্ঞান করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে মাত্রই পালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
যেভাবে বেরিয়ে এলো রাজশাহীর কাহিনি :গৃহকর্মী বেশে অজ্ঞান পার্টির এই চক্রকে গ্রেপ্তারের পর তাদের ছবি ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউজপোর্টাল ও ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়। সেখানে বিউটির ছবি দেখে রাজশাহী থেকে একজন ভুক্তভোগী পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান- ছবিতে বিউটি নামে যিনি রয়েছেন, তিনি ২০১৬ সালে তাদের বাসার লোকজনকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে পালিয়েছিলেন। তাদের কাছে ওই গৃহকর্মীর ছবি থাকলেও দীর্ঘ দিনেও তার খোঁজ দিতে পারছিল না পুলিশ। রাজশাহী থেকে ওই ক্লু পাওয়ার পর এ ব্যাপারে বিউটিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তিনি স্বীকার করেন- শুধু রাজশাহী নয়, দেশের আরও অনেক এলাকায় একইভাবে বাসার বাসিন্দাদের অজ্ঞান করে লাখ লাখ টাকার মূল্যবান জিনিস হাতিয়েছেন তারা।
তিন ব্যাংকারের বাসায় হানা :রাজশাহীর রাজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হান্নানের ছেলে ইমন আলী জানান, ২০১৬ সালে হঠাৎ একদিন তাদের বাসার গেটে এসে 'শান্তি' পরিচয়দানকারী এক মধ্যবয়সী নারী কাজের জন্য কান্নাকাটি করছিলেন। এটা দেখে তার বাবা হান্নানের মন গলে যায়। তিনি ওই নারীকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন। তার ভোটার আইডি ও অন্যান্য পরিচয়পত্র চাইলে কয়েকদিনের মধ্যে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কাজে যোগ দেওয়ার চতুর্থ দিনের মাথায় সকালের নাশতার সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে হান্নান ও তার স্ত্রী সেলিনা হান্নানকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার ও টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। পরে হাসপাতালে দু'দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর হান্নান মারা যান। এ ঘটনা জানাজানি হলে হান্নানের পরিবার জানতে পারে রাজশাহীতে তিন মাসের ব্যবধানে একই ধরনের আরও দুটি ঘটনা ঘটেছে। একটি ঘটে উপশহরের বোয়ালিয়া থানা এলাকায় সোহাগদের বাসায়। আরেকটি ঘটে শাহমখদুম থানা এলাকায়। কাকতালীয়ভাবে তিন বাসার গৃহকর্তাই ব্যাংকার।
ইমন আরও জানান, ওই গৃহকর্মী নিজেকে পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। সোহাগদের বাসায় কাজে যোগদানের সময় গৃহকর্মীর একটি ছবি তুলে রাখা হয়। পরে তারা মিলিয়ে দেখেন ওই গৃহকর্মীই তাদের বাসায় হানা দেন। গেন্ডারিয়া পুলিশ গ্রেপ্তারের পর স্বশরীরে গিয়ে ওই গৃহকর্মীকে তিনি শনাক্ত করেন। স্থানীয় পুলিশের অসহযোগিতায় গৃহকর্মীর ছবি থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পরে ২০১৯ সালে সিআইডি মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য :পুলিশের ওয়ারী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হান্নানুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এই চক্রের সদস্যরা ২০১৩ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় একই ধরনের অপরাধ করে আসছেন। তারা বেশি দিন এক জায়গায় বসবাস করেন না। মোহাম্মদপুরে এক বিচারকের বাসায় এ চক্রের সদস্যরা অপারেশন চালিয়েছিলেন। এ ছাড়া ডেমরা ও পুরান ঢাকার একাধিক বাসা থেকে তারা স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করেন। লুট করা স্বর্ণ তারা তাঁতীবাজারের 'এফ আর গোল্ড হাউসে' বিক্রি করতেন। ওই গোল্ড হাউসের কর্ণধার ফারুক আহমেদকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হান্নানুল ইসলাম আরও বলেন, চেতনানাশক ট্যাবলেটের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে ভিকটিম মারা যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়া গৃহকর্মী, বাসার নিরাপত্তারক্ষী ও গাড়িচালককে চাকরি দেওয়া হলে বড় ধরনের বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকবে।
মন্তব্য করুন