ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছে। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, হাসপাতালের অস্থায়ী আইসোলেশন ওয়ার্ডে অগ্নি নির্বাপনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ব্লিডিং কোড না মেনে আর যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই আইসোলেশন ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আগুন লাগার পর ক্লিনার আরাফাত ছাড়া কেউ নেভানোর জন্য এগিয়ে যাননি। আগুন লাগার পরপরই ডাক্তার-নার্সসহ অন্যরা রোগীদের সরানোর চেষ্টা না করেই নিরাপদে সরে পড়েন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি দায়িত্বশীল সূত্র সমকালকে এই তথ্য জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সমকালকে বলেন, পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন বুধবার ডিএমপি কমিশনারের কাছ থেকে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তা পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হবে। ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ কোনো অনুমতি না নিয়েই অস্থায়ী আইসোলেশন ইউনিট তৈরি করেছিল। এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। ভিডিও ফুটেজ অন্যান্য আলামতের মাধ্যমে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ডিসি সুদীপ কুমার আরও বলেন, আগুন নেভানোর ব্যাপারে ক্লিনার আরাফাত ছাড়া অন্যরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেনি। আরাফাত শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন। এ ঘটনায় সে পুরস্কার পাওয়ার মতো কাজ করেছে। হাসপাতালের অন্য স্টাফরা পরে মেয়াদহীন ফায়ার ইস্টিংগুইশার নিয়ে আসলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।

পুলিশের তদন্ত সূত্র জানায়, সাধারণত যে ধরনের আইসোলেশন ইউনিট ইউনাইটেড হাসপাতাল তৈরি করেছিল সেই ধরনের স্থাপনায় অদাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়। তবে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাহ্য পদার্থ দিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করে। আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভেতরে ছিল সব দাহ্য পদার্থ।

পুলিশ সূত্র জানায়, আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভেতর দু’টি কক্ষ রয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসক ও নার্সদের যে কক্ষ সেখানকার এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আগুনের হাসপাতালে মারা যাওয়া ৫ রোগীর ৪ জনই বেড থেকেই নিথর হয়ে পড়েছিলেন। একজন ছিলেন দরকার কাছাকাছি।

গত ২৭ মে রাজধানীর অভিজাত হাসপাতাল খ্যাত ইউনাইটেডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫ রোগী মারা যান। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পুলিশ।