- রাজধানী
- নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি
নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি

চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। ছবিটি শুক্রবার রাজধানীর মাতুয়াইল বাজার থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা
নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতার অস্বস্তি বেড়েই চলেছে। এমনিতেই পেঁয়াজসহ সবজির বাজার গরম অনেক আগে থেকেই। গত দুই সপ্তাহ ধরে আবার ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। এ নিয়ে টানা দুই সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বাড়ল ৩৫ টাকা। ঊর্ধ্বমুখী থাকা পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহে কেজিতে আরও ৫ টাকা বেড়েছে। আগে থেকেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলুসহ সব ধরনের সবজি। দাম কমছে শুধু ইলিশের। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা কিছুটা কম দামে ইলিশ কিনতে পারছেন। সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম কেজিতে গড়ে কমেছে ১০০ টাকা।
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১২০-১২৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে ছিল ১১০-১১৫ টাকা। মহাখালী বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. জলিল বলেন, দেড় কেজির কম ওজনের ছোট আকারের ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছেন ১৪৫ টাকা কেজি। বড় আকারের ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছেন ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি। পাইকারি আড়তে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরায় বাড়তি দামে বিক্রি করছেন বলে তিনি জানালেন।
শুক্রবার তেজগাঁও মুরগির পাইকারি আড়তে এক দিনে কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ী মো. বারেক মিয়া। তিনি বলেন, গত দু'সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে খামারিরা মুরগি কম তুলছেন। এতে এখন বাজারে সরবরাহ কমেছে। ফলে দাম বেড়ে গেছে। গতকাল এই পাইকারি আড়তে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়। দু'সপ্তাহ আগেও ১০৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
বাজারে সবজির দাম চড়া থাকায় ডিম ও ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বেড়েছে বলে জানান মিরপুরের উত্তর পীরেরবাগ বাজারের বিক্রেতা মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, বাড়তি চাহিদার কারণেও মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। এই বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, দু'দিন আগে মুরগি আনা ছিল। এ কারণে কিছুটা কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে।
এদিকে বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ বেড়েই চলেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ৬৫-৭০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত জুলাই মাসের শেষে দেশি পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকা কেজি ছিল। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ২০-২৫ টাকা কেজি বিক্রি হতো।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশনের হিসাবে গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৭২ শতাংশ।
শীতের আগাম সবজির বাজারে সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও সব ধরনের সবজির দাম এখনও বেশ চড়া। শিমের কেজি ১৩০ থেকে দেড়শ' টাকা, প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৫০ টাকা। পাকা টমেটো ১০০-১২০ টাকা ও গাজর ৮০-১০০ টাকা কেজি। করলার কেজি ৮০-১০০ টাকা। বেগুন ও বরবটি ৭০-৮০ টাকা। কাঁকরোল ও পটোলের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। কাঁচামরিচের দামে ঝাল আগের মতোই আছে। ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকা। কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৪০ টাকা। যদিও করোনার কারণে অনেকেরই আয় কমেছে। এই সময়ে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে বাড়তি চাপে আছেন সাধারণ মানুষ।
গত সপ্তাহে বাজারে মাছের দামে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ইলিশ। মৌসুমে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় আগের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির বেশি, দেড় কেজির কম ওজনের ইলিশের কেজি এখন ৮০০-৮৫০ টাকা। এক কেজির কম ওজনের ইলিশ ৭০০ টাকা। ৫০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশের কেজি ৫০০-৬০০ টাকা। ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশের কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী বলেন, এবার মৌসুমে প্রচুর ইলিশ আসছে। অন্য বছরের চেয়ে এখন বড় আকারের ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে। এ কারণে গত বছরের চেয়ে এবার বড় ইলিশ তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন