রাজধানীর দক্ষিণখানের কাওলা এলাকার বাসা থেকে দিলশাদ নাহার আঁচল (১৯) নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।  শুক্রবার ভোরে নিজের ঘরে তার ঝুলন্ত নিথর দেহ পাওয়া যায়। 

এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। স্বজনরা বলছেন, ভিডিও কলে প্রেমিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে আত্মহত্যা করেন আঁচল।

দক্ষিণখান থানার ওসি সিকদার মো. শামীম হোসেন সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও মৃতের স্বজনরা জানান, সাভারের জাতীয় বস্ত্র ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন আঁচল। তিনি কাওলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তার বাবা দেলোয়ার হোসেন রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী, মা স্কুলশিক্ষিকা। বৃহস্পতিবার রাতে আঁচলের বড় বোনকে দেখতে আসে পাত্রপক্ষ। এ কারণে সবাই ব্যস্ত ছিলেন। এরপর সবাই খেয়ে মোবাইল ফোন সাইলেন্ট মোডে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। তবে রাত জেগে প্রেমিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন আঁচল। পরে গতকাল ভোরে নিজের ঘরে তার লাশ পাওয়া যায়।

মৃতের মামা কাউছার রূপক জানান, আঁচলের সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সেই যুবকের সঙ্গে ভিডিও কলে কথোপকথনের সময় তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে আঁচল প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখেই আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। সেই যুবক বিষয়টি আঁচলের পরিবারকে জানানোর জন্য বারবার কল দিলেও ঘুমিয়ে পড়ায় কেউ সাড়া দিতে পারেননি।

স্বজনরা জানান, পাশাপাশি রুমে থাকতেন আঁচল ও তার বড় বোন। তাদের একটি পোষা বিড়াল ছিল। সেই বিড়ালটি বড় বোনের ঘরে ঘুমালেও মলমূত্র ত্যাগ করতে যেত আঁচলের রুমে। বৃহস্পতিবার রাতে বিড়ালটি ওই রুমে যাওয়ার চেষ্টা করে দরজা বন্ধ পায়। এ কারণে বিড়ালটি বারবার গিয়ে তার বড় বোনকে বিরক্ত করতে থাকে। একপর্যায়ে ভোরে তিনি ঘুম থেকে জেগে বিড়ালকে নিয়ে ছোট বোনের রুমে যাওয়ার সময় দরজা বন্ধ দেখতে পান। এর মধ্যে মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে দেখেন, আঁচলের প্রেমিক অনেকবার কল দিয়েছিলেন। সেইসঙ্গে তিনি আঁচলের আত্মহত্যার চেষ্টার একটি ছবিও পাঠিয়েছেন।

এদিকে দক্ষিণখান থানা পুলিশ বলছে, প্রেমসংক্রান্ত কোনো তথ্য তাদের জানা নেই। তবে মৃত তরুণী পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন বলে স্বজনরা পুলিশকে জানিয়েছেন। আঁচলের লাশ রাজধানীর ফায়দাবাদ এলাকার গণকবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।