ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বইমেলা শেষে রোববার পর্দা নামছে গারো বইমেলার। সাধারণ্যে যারা গারো বলে পরিচিত, তারা নিজেদের মান্দি জাতি হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। বাংলাদেশে বসবাসরত মান্দি লেখকদের বই নিয়ে রাজধানীর গুলশানের কালাচাঁদপুর শিশু মালঞ্চ স্কুল প্রাঙ্গণে এ বইমেলার আয়োজন করে সাহিত্য পত্রিকা ও প্রকাশনা সংস্থা 'থকবিরিম'। 

মান্দিদের আচিক ভাষায় 'থকবিরিম' শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ বর্ণমালা। মেলার শেষদিন উপলক্ষে রোববার বিকেল থেকে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

বক্তব্য রাখছেন জনসন মৃ

বাংলাদেশে আচিক ভাষায় কথা বলা জনসংখ্যা আনুমানিক ৪ থেকে ৫ লাখ। দেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, শেরপুর, জামালপুর ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় এই জনগোষ্ঠীর বসবাস। কবিতা, কথাসহিত্য ও প্রবন্ধ ছাড়াও আচিক ভাষার রয়েছে লোকসাহিত্যের বিপুল সম্ভার। এই খনিকে সবার কাছে উন্মুক্ত করতেই আয়োজিত হয়েছে গারো বইমেলা। 

ভাষার মাসের প্রথম দিন এই বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। লেখক রেভা ক্লেমেন রিছিলের প্রবন্ধ 'গারো বিবাহ' ও 'গারো জাতিসত্তা', সুমনা চিসিমের 'গারো লোককাহিনি'সহ থকবিরিম এই বইমেলায় এনেছে নতুন ৮টি বই। রোববার আসতে পারে আরো কয়েকটি বই। 

মেলায় প্রবেশের গেট

মেলার আয়োজক ও 'থকবিরিম' সম্পাদক মিঠুন রাকসাম সমকালকে বলেন, 'এই বইমেলার উদ্দেশ্য আচিক সাহিত্যের প্রচার ও প্রসার। আমরা চাই নতুন পাঠক তৈরি হোক, বই পড়ার অভ্যাস তৈরি হোক। বিভিন্ন ভাষার লেখকদের সঙ্গে এই জাতিসত্ত্বার লেখকদের পরিচিতিকরণ ও ভাবনা বিনিময় করাও আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। এমন বইমেলা আয়োজনের মধ্য দিয়েই আচিক ভাষাকে বৈশ্বিক মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।'

প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলাতে ৩৫ জন মান্দি লেখকের বই প্রদর্শন ও বিক্রি হচ্ছে, সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক পর্ব। রোববার বিকেলের আলোচনা অনুষ্ঠানে মান্দি লেখকদের পাশাপাশি বক্তব্য রাখবেন অতিথি লেখকেরা। আলোচনা পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আচিক ভাষার গান, কবিতা ও  আবৃত্তি ছাড়াও থাকবে একক ও সমবেত নৃত্য।