- রাজধানী
- বেগুন-শসা-লেবুর দামে সেঞ্চুরি
বেগুন-শসা-লেবুর দামে সেঞ্চুরি

রাজধানীসহ সারাদেশে নিত্যপণ্য ও কাঁচাবাজারে দামের উত্তাপ বেড়েই চলছে। লকডাউন ও রোজা শুরুর পর থেকে কাঁচাবাজারে নানা পণ্যের দাম লাগামহীন। বেগুন, শসা, টমেটো ও লেবুর দাম দ্বিগুন বেড়েছে। এর মধ্যে বেগুন ও শসার কেজিতে এবং লেবুর হালিতে সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোর খুচরা ব্যবসায়ীরা।
টমেটোর দামেও হাফসেঞ্চুরি হয়েছে। ইফতার উপকরণ হিসেবে এসব কৃষিপণ্যের কদর থাকায় দাম বাড়ানোর সুযোগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ক্রেতারা।
বুধবার রোজা, নববর্ষ ও 'সর্বাত্মক লকডাউন' শুরু হয়। এই সুযোগে সবজির বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা অভিযোগ করেন, গত সোমবার রাজধানীর বাজারে বেগুন ও শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কিনেছেন। এখন তা ৯০ থেকে ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। দু'দিন আগেও বাজারে সবচেয়ে কম দামি সবজি ছিল টমেটো। এ পণ্যের দাম বেড়ে এখন কেজি ৫০ টাকা হয়েছে। দু'দিনে এসব পণ্য কিভাবে দ্বিগুণ দাম হয় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন তোলেন তারা।
সবজির ক্ষেত্রে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে, এভাবে বাড়তি দাম গুনতে হবে। তাছাড়া এসব সবজি ক্রেতারা অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনলেও কৃষকরা কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না।
বুধবার রোজার প্রথম দিনেই অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে এসব সবজির। বৃহস্পতিবারও একই দাম ছিল। এখন শসা ও বেগুন কেজি প্রায় একশ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে চারগুণ দাম বেড়েছে লেবুর। গত বুধবার প্রতিহালি লেবু ২০ থেকে ২৫ টাকা ছিল। এখন তা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় উঠেছে। রাজধানীর তালতলা বাজারে লেবু ১২০ টাকা হালি বিক্রি হতে দেখা গেছে। যদিও মঙ্গলবার লেবুর হালি ৪০ টাকা ছিল এই বাজারে।
করলার কেজি দ্বিগুণ বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে বরবটি, ঢেড়শ ও পটলের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। গত সপ্তাহেও যে পাক টমেটো ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে তা এখন ৫০ টাকা কেজি। এছাড়া আলুর দামও কেজিতে ৭ টাকা বেড়ে ২২ থেকে ২৫ টাকা এবং পেঁপে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, মাছ, মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বেশি থাকায় সবজির চাহিদা বেশি। এ কারণে এবার পাইকারি মোকামে সবজির দামও বেড়েছে। তাছাড়া করোনা মহামারির কারণে লকডাউনে কড়াকড়ি আরোপ করায় বাজারে সবজির সরবরহা কম। এতে দামের ওপর প্রভাব পড়ছে। বেশিরভাগ সবজি গত সপ্তাহের তুলনায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচাবাজারে এসব পণ্যের নির্ধারিত দর না থাকায় তদারকিতে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না বাজার মনিটরিং টিম। এছাড়া সরকার যেসব পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সেসব পণ্যও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে জরিমানা করার পরও ব্যবসায়ীরা বড়তি দাম নিচ্ছেন।
বাজারে শুধু গরুর মাংস বেঁধে দেওয়া দাম প্রতিকেজি ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সরকার নির্ধারিত দাম- খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৪০ টাকা, চিনি ৬৭ থেকে ৬৮ টাকা, ছোলা ৬৩ থেকে ৬৭ টাকা, উন্নতমানের মসুর ডাল ৯৭ থেকে ১০৩ টাকা ও মোটা মসুর হলে ৬১ থেকে ৬৫ টাকা, খেজুর সাধারণ মানের ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও মধ্যম মানের ২০০ থেকে ২৫০ টাকা এবং সয়াবিন তেল লিটারে ১৩৯ টাকা। এসব পণ্যই নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সোমবার ও মঙ্গলবারের তুলনায় গত দু'দিন বাজারে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা কম ছিল। তবে সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে বাজারে এলেও অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক। আবার কারও কারও কাছে মাস্ক থাকলেও তা থুতনিতে ছিল। কাঁচাবাজারে সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা এক রকম ঠেলাঠেলি করে পণ্য কিনেছেন অনেক ক্রেতা।
মন্তব্য করুন