- রাজধানী
- বাড়তি ভাড়ায় পথে পথে ভোগান্তি, আছে যানজটও
বাড়তি ভাড়ায় পথে পথে ভোগান্তি, আছে যানজটও
ধর্মঘটের তৃতীয় দিনে রাজধানীর অবস্থাগণপরিবহন বন্ধ থাকলেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা গেছে। রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল এবং ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেশি- ভিডিও: পারভেজ খান
Posted by Samakal on Sunday, November 7, 2021
ডিজেল-কেরোসিনের বাড়তি দাম প্রত্যাহার অথবা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে টানা তৃতীয় দিন রোববারও অব্যাহত রয়েছে সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ধর্মঘট। যান চলাচল বন্ধ থাকায় আজ সকালেও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস না পেয়ে অফিসগামী যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মাঝে মধ্যে বিআরটিসির দু’একটি বাস চললেও তাতে বাদুড়ঝোলা হয়ে মানুষ উঠছেন। এ ছাড়া রাজধানীর রাস্তায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা কিংবা লেগুনাতে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্যান, কাভার্ডভ্যানে চড়েও যাচ্ছেন কর্মস্থল ও গন্তব্যে।
এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা গেছে। রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল এবং ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ রয়েছে বেশি।
সরেজমিন দেখা গেছে, শুক্র-শনিবারের চেয়ে রোববার রাজধানীর সড়কে মানুষের উপস্থিতি বেশি রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড ও মোড়ে শত শত মানুষকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
মাহফুজুর রহমান নামে বেসরকারি এক চাকরিজীবী মোহাম্মদপুর থেকে যাবেন তেজগাঁওতে। কিন্তু ভিড়ের কারণে বিআরটিসি বাস না পেয়ে সিএনজি অটোরিকশা ডাক দেন তিনি। কিন্তু ভাড়া শুনে বলেন, ‘এর চেয়ে হেঁটে যাওয়াই ভালো।’ তিনি সমকালকে বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও বাসে উঠতে পারিনি। সকাল ১০টায় অফিসে যাওয়ার কথা ছিল। এখন বেজে গেছে প্রায় সাড়ে ১০টা। সঠিক সময়ে অফিসে না গেলে বেতন কাটা যাবে। এদিকে সিএনজিতে ও রিকশায় ভাড়া চাচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। পকেটে এত টাকাও নেই। তাই ভাবছি হেঁটেই রওনা দেব।’
সিএনজিতে ও রিকশায় কত টাকা ভাড়া চাচ্ছে জানতে চাইলে মাহফুজ বলেন, ‘সাধারণত মোহাম্মদপুর থেকে তেজগাঁওতে আমার অফিসে যেতে সিএনজিতে ভাড়া নেয় ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা। সেখানে আজ ২৫০-৩০০ পর্যন্ত চাচ্ছেন সিএনজি চালকরা। আর রিকশায়ও ২০০-৩০০ টাকা চাচ্ছে। আমরা যেন তাদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি মনে হচ্ছে।’
সাভার থেকে মানিকগঞ্জ যাচ্ছেন রাসেল শেখ নামে এক তরুণ। তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন না পেয়ে বিকল্প যানবাহনে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছি। গুণতে হয়েছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট সামলে সাভার থেকে ফার্মগেট আসতেই আমার ৩৫০ টাকা খরচ হয়েছে। এখান থেকে মানিকগঞ্জে যাবে সরাসরি এমন কিছু নেই। আরও ৩০০-৪০০ টাকা খরচ হতে পারে গন্তব্যে পৌঁছাতে।’
গাবতলীর এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বিজন সরকার। তিনি বলেন, মালিবাগ থেকে গাবতলী পর্যন্ত যেতে সিএনজি অটোরিকশাচালক ভাড়া চেয়েছেন ৬৫০ টাকা। পরে বাধ্য হয়ে ৫০০ টাকায় যেতে হয়েছে। রাস্তায় যানজটও ছিল।
এদিকে বাস ভাড়া বাড়ানো নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে আজ রোববার বৈঠকে বসছেন বাস মালিকরা। জানা গেছে, জ্বালানি তেলের বাড়তি দামসহ ১৯টি খাতের ব্যয় ধরেই ভাড়া নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিটি ধাপেই বাড়তি দর যুক্ত করে নতুন ভাড়া নির্ধারণের দাবি করেছেন মালিকরা।
গত বুধবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি জানায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা আসে। রাতেই তা কার্যকর হয়। এর ফলে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের নতুন দর হয় প্রতি লিটার ৮০ টাকা; যা এতদিন ছিল ৬৫ টাকা।
ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধিতে জীবনযাত্রার ব্যয় ও পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ট্রাক, বাসসহ পরিবহনের জ্বালানি হিসেবেই ডিজেলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। সংশ্নিষ্টরা বলছেন, ট্রাক ভাড়া বাড়লে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে যাবে। দাম বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। চাপ পড়বে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর।
মন্তব্য করুন