- রাজধানী
- দণ্ডপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের নির্দোষ ঘোষণার দাবি স্বজনদের
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ট্র্যাজেডি
দণ্ডপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের নির্দোষ ঘোষণার দাবি স্বজনদের

সমাবেশ মঞ্চের একটি চিত্র।
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকায় জাপানি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনা অভ্যুত্থানের অভিযোগে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে ফাঁসি, কারাদণ্ড এবং চাকরিচ্যুত হওয়া সেনা সদস্যদের নির্দোষ ঘোষণা করাসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
রোববার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব দাবি জানান তারা। ‘১৯৭৭ সালে খুনি জিয়ার গুম ষড়যন্ত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গ’-এর ব্যানারে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো- ২ অক্টোবর যেসব সেনা সদস্য ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে স্ব-স্ব পদে সর্বোচ্চ র্যাং ঙ্কে পদোন্নতি দেখিয়ে বর্তমান স্কেলে বেতন-ভাতা ও পেনশনসহ সরকারি সব প্রকার সুযোগ সুবিধা দেওয়া, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের শহীদ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করাসহ তাদের কবর চিহ্নিত করে কবরস্থানে নাম সহ-স্মৃতি স্তম্ভ তৈরি করা, দণ্ডপ্রাপ্ত সব সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে তাদের পোষ্যদের যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরি দেওয়া, দণ্ডপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা এবং জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা।
‘১৯৭৭ সালে খুনি জিয়ার গুম ষড়যন্ত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গ’-এর সমন্বয়ক মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিনের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ম তামিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল হারুন-অর-রশিদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান ডা. নুজহাত চৌধুরীসহ সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ১৯৭৭ সালে গণফাঁসির শিকার সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের সন্তানগণ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পরিকল্পিতভাবে একটি অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি করেন। পরবর্তীতে তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে জিয়াউর রহমান একদিনের সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি সম্পন্ন করতেন ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে। রাতের আঁধারে কারফিউ দিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হতো। কোনো প্রকার ধর্মীয় সৎকার ছাড়াই লাশগুলো ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে, কুমিল্লার টিক্কারচর কবরস্থানে মাটিচাপা দেওয়া হয়। সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের নির্দেশে গঠিত বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালের কথিত বিচারে ফাঁসি হওয়া ১৯৩ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা ছিল ১১৪৩ জন, তেমনি কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন সেনা ও বিমান বাহিনীর আড়াই হাজার সদস্য।
তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তড়িঘড়ি করে ফাঁসি দেওয়ার আগে আত্মপক্ষ সমর্থন কিংবা আইনজীবী নিয়োগের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। অথচ এই মানুষগুলোর ন্যায়বিচারের অধিকার ছিলো। ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসে দীর্ঘদিন পরিবারগুলোর কাছে এই তথ্য অজানা ছিলো। আমরা জানিনা কোথায় তাদের কবর।
মন্তব্য করুন