দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শিক্ষার্থীসহ সব সড়ক হত্যার বিচার করা এবং নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে 'সড়কে স্বজনহারাদের সমাবেশ' শীর্ষক এক সমাবেশে এসব দাবি জানান তারা। সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে এর আয়োজন করা হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- ঢাকাসহ সারাদেশে সব গণপরিবহনে (সড়ক, নৌ, রেল ও মেট্রোরেল) শিক্ষার্থীদের হাফ পাস নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন জারি, গণপরিবহনে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ জনসাধারণের চলাচলের জন্য যথাস্থানে ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিত, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সব যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত, পরিকল্পিত বাস স্টপেজ, পার্কিং স্পেস নির্মাণ ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত, দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও যথাযথ তদন্তসাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহলকে নেওয়া, বৈধ ও অবৈধ যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনাসহ বিআরটিএর সব কার্যক্রমের ওপর নজরদারি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঢাকাসহ সারাদেশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অবিলম্বে স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিকায়ন এবং পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত এবং ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বাড়াতে একে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করাসহ ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান সম্প্র্রচার করা।

সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থী ছাড়াও সড়কে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থীদের মা-বাবাসহ স্বজনরা বক্তব্য দেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে একপর্যায়ে নিহত শিক্ষার্থীদের স্বজনকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। তাদের দাবি, সন্তান মারা গেলেও বিচার কিংবা ক্ষতিপূরণ কোনোটিই পাননি তারা।

সড়কে প্রাণ হারানো সাইফুল ইসলামের বাবা শাহজাহান কবির বলেন, দুই বছর আগে আমার একমাত্র ছেলেকে আমি হারিয়েছি। এখন পর্যন্ত তার বিচার পাইনি, কিন্তু সেই চালক এখন ঠিকই গাড়ি চালাচ্ছে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সব দপ্তরে গিয়েছি কিন্তু বিচার পাইনি এবং কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

আন্দোলনের সমন্বয়ক মঈদুল ইসলাম দাউদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এখনও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরেনি। বরং মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

সমাবেশ থেকে আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এগুলো বাস্তবায়ন না হলে ১৫ ডিসেম্বর সচিবালয়ের সামনেসহ সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।