ঢাকা শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

টুকুর নির্দেশনায় রেললাইন কাটেন যুবদল নেতা, দাবি পুলিশের

টুকুর নির্দেশনায় রেললাইন কাটেন যুবদল নেতা, দাবি পুলিশের

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৫:১৬ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৫:৩৩

রেললাইনে নাশকতা করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার ও ব্যাপক প্রাণনাশের পরিকল্পনা করেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলে দাবি করেছেন ডিএমপি। টুকুর নির্দেশনায় গাজীপুরের শ্রীপুরে রেললাইন কাটেন ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীরা।

রোববার রেললাইন কেটে নাশকতার ঘটনার মূলহোতা কবিরসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গ্রেপ্তার দুইজন হলেন- যুবদল নেতা ইখতিয়ার রহমান কবির ও লালবাগ থানার ২৪ নম্বর ওয়ার্ড মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি ইমন হোসেন।

আজ সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার যুবদল নেতা ইখতিয়ার রহমান কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলীয় ঊচ্চপর্যায় থেকে বড় কিছু করার চাপ ছিল। রেললাইন কাটার পর তাদেরকে মোটা অংকের টাকাও দেওয়া হয় দলীয়পর্যায় থেকে। 

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যুবদলের শীর্ষনেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নির্দেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পর কবির গাজীপুর ছাত্রদলের দুই নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের বলা হয়, স্থান নির্বাচন করে নাশকতা সফল করার জন্য। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য তোহা ও মাসুম মিলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূঁইয়ার বাসায় মিটিং করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কৌশল ঠিক করা হয়। 

তিনি বলেন, ১২ ডিসেম্বর ইমনের বাসা থেকে যন্ত্রপাতি গাজীপুর নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন ইমন ও কবির কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে জয়দেবপুর রেলস্টেশনে যায়। এরপর তোহা ও মাসুম চলাচলের জন্য মাইক্রোবাস ভাড়া করা, গ্যাস সিলিন্ডার কেনাসহ সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখে। এই সময়ে তারা ট্রেনের শিডিউল জেনে রাখে। এরপর ১৩ তারিখ রাতে স্থানীয় একটি রেস্তোরায় রাতের খাবার খাওয়ার পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে রওয়ানা দেয়। এই সময়ে বেশ কয়েকজনকে পথ থেকে তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে মোট ৯ জন একত্রিত হয়ে রেললাইন কাটার কাজ শুরু করে।

সিসিটিসি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তার কবির এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পাশাপাশি সে জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে যাত্রাবাড়ি, ডেমরা, নিউমার্কেট, পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টিরও বেশি বাসে আগুন দিয়েছে। 

অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, কবির এই রেললাইন কাটার নির্দেশদাতা, পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও নাশকতার বেশ কয়েকটি ঘটনায় তার নাম এসেছে। এর আগে পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় গান পাউডারসহ ছাত্রদল কর্মী গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কবিরের নাম এসেছে। বিশেষ করে মহানগর দক্ষিণ এলাকায় যত নাশকতা ঘটেছে, তার বেশিরভাগ ঘটনার মূল পরিকল্পনা ও নির্দেশদাতা হিসেবে সে জড়িত বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। ডেমরায় বাসে আগুনের ঘটনায় চালকের সহকারী নিহতের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তাকে আমরা খুঁজছিলাম। সব কয়টি ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কবিরকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে আনা হবে। 

বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতার নির্দেশনা ছিলো কিনা জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে নির্দেশদাতাদের মধ্যে যুবদলের সভাপতি সালাউদ্দিন টুকু। টুকু তাকে ডেকে জানায়, উপর থেকে রেলে নাশকতার নির্দেশ আছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কবিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

×