চিকিৎসাধীন ছয় মাসের যমজ দুই শিশুকে বের দেওয়ার পর একজনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হাসপাতাল মালিক গোলাম সরোয়ার বড় অংকের টাকা আদায়ের জন্য তাদের মায়ের ওপর নির্যাতনও চালিয়েছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব। 

‘আমার বাংলাদেশ’ নামে ওই হাসপাতালের মালিককে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার কারওয়ানবাজারের র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, দুই শিশুকে কম খরচে চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আয়েশা আক্তারকে দালালের মাধ্যমে হাসপাতালে আনেন গোলাম সারওয়ার। কিন্তু আসলে আইসিইউতে রেখে বড় অংকের অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'ভর্তির ছয়  দিন পর সোয়া লাখ টাকার বিল আয়েশার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করে পর্যায়ক্রমে পুরো বিল পরিশাধের প্রতিশ্রুতি দিলেও চাপপ্রয়োগ করতে থাকেন গোলাম সারওয়ার। এক পর্যায়ে জমজ দুই ভাইয়ের চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয় গোলাম সরোয়ার। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগী মাকে হাসপাতালেই শারীরিক নির্যাতন করে এবং হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন জমজ দুই শিশুকে রাস্তায় বের করে দেয় গোলাম সরোয়ার (৫৭)।'

ওই হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার যে ফুটেজ র‌্যাব উদ্ধার করেছে, তাতে আয়েশার সঙ্গে গোলাম সারওয়ারকে উত্তেজিতভাবে কথা বলতে দেখা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাণিবিদ্যায় পড়াশোনা শেষ করার পর প্রায় দুই দশক ধরে হাসপাতাল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সরোয়ার। আগে আরও পাঁচটি হাসপাতাল চালিয়েছেন তিনি।

মঈন বলেন, 'একটি হাসপাতাল চালু করার দুই-তিন বছরের মধ্যেই সেই হাসপাতাল বন্ধ করে দিতো সারোয়ার। কারণ এ ধরনের (অনিয়মের) অভিযোগ আসলেই ‘সুইং’ করত সরোয়ার। অন্য নামে আবার আরেকটা হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলতো।'

এর আগে সারোয়ার রাজারবাগে মোহাম্মদিয়া মেডিকেল সার্ভিসেস, বাসাবোতে আরাফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুগদায় মমতাজ মেমোরিয়াল সেন্টার ও হাসপাতাল, মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশ ট্রমা স্পেশালাইজড হাসপাতাল ও শ্যামলীতে ঢাকা ট্রমা হাসপাতাল চালিয়েছে বলেও এই র‌্যাব কর্মকর্তা জানান।

এই ব্যবসার আসার আগে হাসপাতালে রোগীর দালালি করতেন তিনি।