ঢাকায় প্রস্তাবিত পাতালরেল (সাবওয়ে) নির্মাণ করতে প্রতি কিলোমিটারে গড়ে ব্যয় হবে ২ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। তাই পাতালরেলের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে ঢাকার যানজট সমাধানের জন্য ফুটপাত উদ্ধার ও উন্নত বাস সার্ভিসের প্রতি জোর দিয়েছেন নগর বিশেষজ্ঞরা।

আজ শুক্রবার দুপুরে ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।

‘ঢাকায় পাতালরেল প্রকল্প: টেকসই পরিবহন পরিকল্পনার প্রাসঙ্গিকতায় উপযোগিতা বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ২০৫০ সালের মধ্যে ২৫৮ কিলোমিটার পাতালরেল নির্মাণ করতে চায় সরকার। এতে মোট ১১টি রুট থাকবে। এর মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে চারটি রুট চালুর পরিকল্পনা আছে। ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে সম্ভাব্যতা যাচাই ও প্রাথমিক নকশা তৈরির কাজ শেষ হবে। এ কাজেই ব্যয় হবে ৩১৮ কোটি টাকা।

আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ২৫৮ কিলোমিটার পাতালরেল তৈরিতে মোট ব্যয় হবে ৬৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হবে প্রায় ২ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। ২০৩০ সালের মধ্যে চারটি রুট নির্মাণ করতে যে ব্যয় হবে, তা চলতি অর্থবছরে দেশের মোট বাজেটের প্রায় অর্ধেক। 

ঢাকার কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) যে সুপারিশগুলো করা হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হলে পাতালরেল নিয়ে সমীক্ষার দরকার হতো না বলে অনুষ্ঠানে জানান পরিবহন বিশেষজ্ঞ এস এম সালেহ উদ্দিন। তিনিও পাতালরেল না করার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, ঢাকা শহরে চলমান উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে মানুষ বিরক্ত হয়ে গেছে। তিনি এসব কাজ দ্রুত শেষ করা এবং ‘বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন’ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।

পাতালরেল শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের গলার কাঁটা হতে পারে বলে অনুষ্ঠানে আশঙ্কা প্রকাশ করেন আইপিডির উপদেষ্টা ও নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদ। তিনি বলেন, বড় প্রকল্প ঋণের বোঝাও বাড়ায়। তাই তিনি বড় প্রকল্প না নিয়ে, ব্যয়সাশ্রয়ী প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা শহরের সমস্যা সামাধানের দাবি জানান।