- রাজধানী
- তেঁতুলতলা মাঠে ভবন হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তেঁতুলতলা মাঠে ভবন হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

তেঁতুলতলা মাঠ
রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানার জন্য ভবন নির্মাণ করা হবে না। মাঠটি যেভাবে ছিল সেভাবেই থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে আর কোনো নির্মাণকাজ হবে না। মাঠটি যেভাবে ব্যবহার করা হতো সেভাবেই ব্যবহার হবে। সেখানে আর থানার ভবন হবে না। খেলার মাঠই থাকবে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্দেশ দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান জানান, জায়গাটি পুলিশকে অধিগ্রহণ করে দেওয়া হয়েছে। তাই জায়গাটি পুলিশেরই থাকবে। এ নিয়ে তিনি বলেন, মাঠের মালিকানা পুলিশের, আর এই মাঠ ব্যবহার করবে এলাকাবাসী।
তিনি বেলন, তেঁতুলতলা মাঠ যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। এই খালি জায়গার ব্যবহার আগের মতো এলাকার লোক করবে। তবে পুলিশের জমি পুলিশের থাকবে। রক্ষণাবেক্ষণ করবে পুলিশ।
কলাবাগানের এই মাঠটিতে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরেই প্রতিবাদ ও আন্দোলন চলছিল। গত রোববার আন্দোলনে অংশ নেওয়া সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে ইসা আব্দুল্লাহ পিয়াংসুকে আটক করে পুলিশ। আটকের ১৩ ঘণ্টা পর 'আর আন্দোলন করব না'- এমন মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরপর থেকে আন্দোলন আরও জোরালো হতে থাকে।
অর্ধশতাব্দী ধরে যে মাঠে প্রজন্মের পর প্রজন্ম খেলে বেড়ে উঠেছে, সেই মাঠ ফিরে পেতে প্রতিবাদে শামিল হন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। আন্দোলনে হাতে হাত রাখেন পরিবেশকর্মী, সংস্কৃতিকর্মীসহ অগণিত মানুষ। বুধবার বিকেলে তেঁতুলতলা মাঠে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে মাঠ শিশু-কিশোরদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান মানবাধিকার, পরিবেশ আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা। অন্যথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এছাড়া মাঠে দেয়াল নির্মাণ বন্ধে গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা একটি জায়গা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি দেব। মন্ত্রী জানিয়েছেন- সেই চিঠি তিনি পৌঁছে দেবেন। মন্ত্রী আমাদের হতাশ করেননি। আমরা কিছুটা আশা পাচ্ছি।
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তেঁতুলতলা কখনও মাঠ ছিল না, এটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি ছিল, সেজন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে থানা নির্মাণের। এখন বিকল্প জায়গা পেলে অন্য স্থানে থানা করার বিষয় বিবেচনা করা হবে। তবে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, তেঁতুলতলা মাঠ কখনোই পুলিশের ছিল না, এখনও নেই। মাঠ ফিরে পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আসে গতকালের কর্মসূচি থেকে।
এ অবস্থার মধ্যে মাঠে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে তেঁতুলতলা মাঠে বৃক্ষরোপণ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্যদিকে পুলিশি প্রহরায় চলে মাঠে থানা ভবনের দেয়াল নির্মাণ। বুধবার রাতে প্রতিবাদ ও আপত্তির মুখে মাঠের উত্তর পাশের পুরো এলাকাজুড়ে দেয়াল তৈরির কাজ শেষ করে পুলিশ।
মন্তব্য করুন