- রাজধানী
- অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

বিদ্যালয় বন্ধ ষোষণা হলে শিক্ষার্থীরা হোস্টেল ছেড়ে যান - সমকাল
দিনাজপুর আমেনাবাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে অধ্যক্ষকে ছুটি দিয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
এদিকে অধ্যক্ষকে নির্দোষ দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শেষে বিদ্যালয় ভাঙচুর করেছে। এরপর বিদ্যালয়টি আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ওই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে সংবাদকর্মীদের।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ দিন আগে বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রী তার পরিবারকে জানায় যে, অধ্যক্ষ তার গায়ে হাত দিয়েছেন। এমন অভিযোগের পর ওই ছাত্রীর পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নেয়।
এর আগে ওই ছাত্রীর চাচা (জনপ্রতিনিধি) বিদ্যালয় পরিচালনা প্রতিষ্ঠান এবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. আমজাদ হোসেনকে অবহিত করেন। তিনি ব্যাপারটি সমাধনের আশ্বাস দেন। এরই মধ্যে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আরও ৩ জন শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে। এই ঘটনার পাঁচদিন পর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে ছুটিতে পাঠানো হয়।
ছুটি চলাকালেই গত ১৮ জুন রাতে বিদ্যালয়টির আবাসিক ছাত্রীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে বিক্ষোভ করে। পরে তাদের সঙ্গে ছাত্ররাও বিক্ষোভে যোগ দেয়। এ সময় তারা ক্যাম্পাসে ভাঙচুর চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিকভাবে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরদিন ১৯ জুন রোববার সকালে শিক্ষার্থীরা আবারও বিক্ষোভের চেষ্টা করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি আগামী শুক্রবার পর্যন্ত বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আবাসিক হল বন্ধের নির্দেশ দেয়।
ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও হঠাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর বিকেলের দিকে ঘটনা জানতে সংবাদকর্মীরা আমেনাবাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গেলে তাদের হেনস্তা করা হয়।
অশান্ত ঘোষ নামে এক অভিভাবক সমকালকে বলেন, কেন স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তা আমরা জানি না। শুধু ফোন করে বলা হয়েছে-এক্ষুনি আপনার বাচ্চাদের নিয়ে যান। এজন্য স্কুলে এসে আমার দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ফিরছি।
শরিফুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, শুনেছি মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে- এমন একটি ঘটনা আছে। তবে বিস্তারিত জানি না।
চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থী বিক্ষোভের খবরে আমি ঘটনাস্থলে যাই। পরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলি। জানতে পারি, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন ছাত্রী। তিনি বলেন, তবে এ ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়টির অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সমকালকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য এরশাদ আলী বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তিনি অপরাধী হলে এর বিচার হবে।
এ ব্যপারে জানতে এবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. আমজাদ হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা স্পর্শকাতর। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি
অভিযোগকারী ওই ছাত্রীর চাচা (জনপ্রতিনিধি) বলেন, আমি চেয়েছিলাম আমার ভাতিজির বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সমাধান করবেন। কিন্তু তারা কোনো সমাধান করছে না। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর আমেনা বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রায় দুই হাজার ২০০ অধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে, যার অধিকাংশই আবাসিক।
মন্তব্য করুন