কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে বহু গুণ। এ সুযোগে বেড়েছে দালালের উৎপাত। দালালের নিজস্ব ভাষায় প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা। এতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে পশু ক্রয়-বিক্রয়।

গাইবান্ধাসহ রংপুর অঞ্চলের পশুর হাটগুলোতে এসব শব্দের প্রচলন রয়েছে। দালালের শব্দ বা ভাষা অন্য দালাল ছাড়া বোঝেন না।
এক দালাল আরেক দালালের সঙ্গে এসব ভাষায় কথা বলেন। যেমন শিংগি ৩ হাজার, চামটি ৪ হাজার, বর্নি ৫ হাজার, ঝালি ৭ হাজার, কাটা ৮ হাজার, খুটাল ৯ হাজার, দিক ১০ হাজার, কালাই ১১ হাজার ইত্যাদি।

উপজেলার বনগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন সরকার বলেন, পশুর হাটে দালালরা তাঁদের নিজেদের সৃষ্টি করা শব্দকে 'ঐহিত্য' মনে করেন। তাঁদের এ ভাষা শুধু ক্রেতা-বিক্রেতা ঠকানোর জন্যই।

সাদুল্যাপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোজহারুল মান্নান আকন্দ বলেন, এগুলো মানুষের তৈরি সাংকেতিক শব্দ। যা শুধু সংশ্নিষ্টরাই বোঝেন।
মিরপুর গ্রামের গরু ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া বলেন, দালালের ভাষা না বুঝলে নিশ্চিত লোকসান গুনতে হবে ক্রেতা-বিক্রেতাকে। তাই দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় দালালের ভাষা শিখেছেন তিনি। এখন সেই ভাষা ব্যবহার করে হাটে কেনাবেচা করেন। এখন তাঁর লোকসান হয় না।

গাইবান্ধার ধাপেরহাট বাজারের ইজারাদার লুৎফর রহমান লতিফ বলেন, বর্তমানে সব পশুর হাটে দালাল আছে।

সাদুল্যাপুর হাটের ইজারাদার ফরহাদ হোসেন লাভলু বলেন, হাটে দালালসহ অন্য কোনো কারণে যেন কেউ প্রতারিত না হয় সেজন্য সব সময় সতর্ক থাকেন তিনি। তাই হাটবারে পুলিশ আনেন এবং ভেটেরিনারি টিমের সদস্যদের কাজের ব্যবস্থা করেন।

গত শুক্রবার দাড়িয়াপুর হাটে পশু কিনতে যাওয়া আবদুল মালেক আকন্দ বলেন, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার চেয়ে দালালের সংখ্যা বেশি। পশুর কাছে গেলেই দালাল এসে উৎপাত শুরু করে।

সাদুল্যাপুর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় জানান, প্রতিটি কোরবানির পশুর হাটে পুলিশ কাজ করছে। প্রয়োজনে ক্রেতা-বিক্রেতা পুলিশের সাহায্য নিতে পারবেন। অভিযোগ করতে পারবেন দালালের বিরুদ্ধেও।

ইউএনও রোকসানা বেগম বলেন, পশুর হাট সব সময় মনিটর করা হচ্ছে। হাটে পশু ক্রয়-বিক্রয়ে দালাল দ্বারা প্রতারিত হলে প্রশাসনের সহায়তা নিতে পারবেন।

বিষয় : কোরবানির পশুর হাট পশুর হাট

মন্তব্য করুন