সাংবাদিক সোহানা পারভীন তুলির মৃতদেহের ময়নাতদন্ত বৃহস্পতিবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। পরে সংশ্নিষ্ট চিকিৎসক জানান, মৃতের গলায় দড়ির দাগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সংগৃহীত আলামতের রাসায়নিক পরীক্ষা ও ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট এলে পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া যাবে।

এদিকে তদন্ত-সংশ্নিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা সমকালকে জানান, মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে ফোনকলের রেকর্ড, খুদেবার্তা ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তুলির সঙ্গে যাদের দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। এখন পর্যন্ত পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা।

হাজারীবাগ থানার ওসি মো. মোক্তারুজ্জামান সমকালকে বলেন, সোহানা পারভীনের মোবাইল ফোনটি লক করা অবস্থায় পাওয়া গেছে। সেটি খোলার চেষ্টা চলছে। খোলার পর মেসেঞ্জার-হোয়াটসঅ্যাপ বা এ জাতীয় অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বার্তা আদান-প্রদান সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যাবে। তাঁর মোবাইল ফোনের কললিস্ট পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
মৃতের ভাই মোহাইমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এটি আত্মহত্যা কিনা এখনও বুঝতে পারছি না। কারণ আমরা কেউ এ ধরনের কোনো কিছুর আভাস পাইনি। পুলিশের তদন্তে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে।
ব্যক্তিজীবনের হতাশা থেকে আত্মহত্যা- তদন্ত-সংশ্নিষ্টদের এমন ধারণা সম্পর্কে তিনি বলেন, সব মিলিয়েই এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর রায়েরবাজারের শেরেবাংলা রোডের বাসা থেকে সাংবাদিক সোহানা পারভীনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর ভাই মোহাইমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে হাজারীবাগ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা করেছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর সদর উপজেলার বকচর জামে মসজিদসংলগ্ন হুঁশতলা কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। এর আগে নিজ এলাকায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বছরের মে পর্যন্ত বাংলা ট্রিবিউনে জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন সোহানা। এর আগে তিনি কালের কণ্ঠ ও আমাদের সময় পত্রিকায় কাজ করেছেন। সম্প্র্রতি তিনি 'মনোহর' নামে একটি অনলাইন শপ চালু করে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। এর আগে কিছুদিন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন।