- রাজধানী
- মারুফ হত্যার নেপথ্যে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব
মারুফ হত্যার নেপথ্যে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব

প্রতীকী ছবি
সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে ১৬ বছরের মারুফকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে কিশোর-তরুণদের একটি দল। বুধবার রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের ওই ঘটনায় তার বন্ধু শফিকুল ইসলাম ওরফে হলিউড ও আশিককেও মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে জড়িত ছিল ২০-২৫ জনের একটি দল। তাদের ছয়জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। নিহতের স্বজনরা বলছেন, হত্যায় জড়িতরা একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এদিকে বুধবার বনানীর কড়াইল এলাকায় আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আল আমিন নামে এক যুবক নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঠাকুর দাস মালো সমকালকে বলেন, নিহত মারুফের মামা মাসুম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তিনি এজাহারে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করেছেন। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
বুধবার রাতে শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি এলাকায় পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ির সামনে কিশোর মারুফকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সে স্থানীয় নিউ সবুজ অটোমোবাইল নামের একটি গ্যারেজে মেকানিক হিসেবে কাজ করত।
নিহতের মামা মাসুম সমকালকে বলেন, কে বড় ভাই, কে ছোট ভাই- তা নিয়ে স্থানীয় সজীবের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিরোধ চলে আসছিল। দু'জনেরই বয়স ১৪ বছর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ নিয়ে রাজারবাগ এক নম্বর গেট এলাকায় দুই পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জেরে বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে প্রথমে হলিউডের ওপর হামলা হয়। এতে অংশ নেয় খায়রুল ইসলাম, জনি, টনি, আকাশ, মোমিন ওরফে খাজা মোমিন, শেখ সাদী আকাশ, শাওন, মাজিদ, আলাউদ্দিন ওরফে রাকিব, শিশির, রাসেল, হাসিব ও জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন। আধা ঘণ্টা পর গ্যারেজ থেকে ফেরার পথে মারুফকে ও সঙ্গে থাকা আশিককে কাঠের টুকরো দিয়ে পেটানো হয়। দৌড়ে পালানোর সময় এক স্থানে পড়ে গেলে মারুফকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তারা। এতে অংশ নেয় জনি, টনি, শাওন ও আকাশ।
মাসুম দাবি করেন, হত্যায় জড়িতরা স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং তারা নানা অপরাধে জড়িত। তাদের ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে কড়াইলে আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষে আল আমিন নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া সমকালকে বলেন, ওই ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। এরপর অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দাবি করেন, সপ্তাহখানেক আগে স্থানীয় শিশু-কিশোরদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েক দফা মারামারিও হয়। বুধবার বিকেলে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন একজন। তবে নূরানী মসজিদে এশার নামাজ পড়তে গেলে আবারও বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেখানেই দু'পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এর আগে পুলিশ জানায়, কড়াইল ইউনিট আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ হয়। এ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, সব বিষয়ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কড়াইল বস্তি এলাকায় মসজিদের ভেতর শুরু হওয়া সংঘর্ষ পরে বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে মুদি দোকানি আল আমিন নিহত এবং নারীসহ সাতজন আহত হন। তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন