- রাজধানী
- মামলা করতে এখনও দৌড়ঝাঁপ পরিবারের
হাতিরঝিল থানায় যুবকের মৃত্যু
মামলা করতে এখনও দৌড়ঝাঁপ পরিবারের

রাজধানীর হাতিরঝিল থানা পুলিশের হেফাজতে মারা যাওয়া রুম্মন শেখের স্ত্রী জান্নাত আক্তার পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য গতকাল সোমবারও আদালতে গেছেন। আলোচনা করেছেন আইনজীবীর সঙ্গে। কিন্তু মামলা হয়নি। এদিকে, প্রায় ৫৫ ঘণ্টা পর গতকাল দুপুরে বাবা পেয়ার আলী ও বড় ভাই সুমন শেখের কাছে রুম্মনের লাশ বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বিকেলে পশ্চিম রামপুরার ওয়াপদা রোডের ঝিলকাননে পেয়ার আলীর বাসার সামনে লাশ নেওয়া হয়। লাশের গাড়ির সঙ্গে পুলিশ ছিল সার্বক্ষণিক। সন্ধ্যায় আজিমপুর কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের পর রুম্মনের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা ছিল। পুলিশের কাছ থেকে গতকাল দুপুরের দিকে লাশ বুঝে নিয়েছেন তাঁর বাবা।
রুম্মনের স্ত্রীর ভাই মোশারফ হোসেন বিকেলে সমকালকে বলেন, 'আমাদের সঙ্গে নাটক শুরু হয়েছে। আমরা আদালতে এসেছি। রুম্মনের স্ত্রী জান্নাত আক্তার অসুস্থ। সে কান্নাকাটি করছে। এরপরও আদালতে বসে আছে মামলা করার জন্য। ওদিকে শুনছি, রুম্মনের বাবার কাছে পুলিশ লাশ দিয়েছে।'
চুরির মামলায় গত শুক্রবার ঝিলকাননে বাবার বাসা থেকে রুম্মনকে গ্রেপ্তার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। রাতে রাখা হয় থানা হাজতখানায়। পুলিশ বলছে, রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাজতখানার ভেন্টিলেটরের গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে রুম্মন আত্মহত্যা করেছেন। রাতে আত্মহত্যা করলেও পুলিশের নজরে আসে শনিবার সকাল ৮টায়। এর আগে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা উঁকি মেরেও দেখেননি, আসামি কী অবস্থায় আছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে রাত সাড়ে ৩টায় আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। রুম্মনের পরিবারের অভিযোগ- আত্মহত্যা নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানাতেও অনেক সময়ক্ষেপণ করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকেলে লাশ পাঠানো হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে। ময়নাতদন্তের পর লাশ নেয়নি পরিবার। তাদের অভিযোগ, লাশ নিতে পুলিশ শর্ত জুড়ে দিয়েছিল। ফলে সেদিন থেকে লাশ মর্গেই রাখা ছিল। গতকাল রুম্মনের বাবা পেয়ার আলী ও বড় ভাই সুমন শেখকে হাতিরঝিল থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। সেখানে লাশ হস্তান্তরের বিষয় নিয়ে 'আলোচনা' করেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর বিকেল পৌনে ৩টার দিকে মর্গে নিয়ে গিয়ে তাঁদের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেয় পুলিশ।
লাশ নেওয়ার পর মোহাম্মদপুরে একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গোসল করানো হয়। এরপর লাশবাহী গাড়িতে করে নেওয়া হয় ঝিলকাননে পেয়ার আলীর বাসার সামনে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, লাশের গাড়ির সঙ্গে পুলিশের দুটি গাড়ি ছিল। বাদ আসর সেখানে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর কবরস্থানে। আদালত থেকে রুম্মনের স্ত্রী জান্নাত আক্তার ও তাঁর স্বজনরা কবরস্থানে যান।
মন্তব্য করুন