- রাজধানী
- ছোট্ট শিশুর সামনে কাভার্ডভ্যানচাপায় পিষ্ট বাবা
ছোট্ট শিশুর সামনে কাভার্ডভ্যানচাপায় পিষ্ট বাবা

প্রতীকী ছবি
বাবার সঙ্গে চাচার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল ছোট্ট শিশু সাজিদ আহমেদ। রাতে বাবা ও চাচার সঙ্গে মোটরসাইকেলে ফিরছিল সে। পথে বৃষ্টির কারণে তারা একটু থামেন। আর তখনই কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় তিনজনই মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এ সময় শিশুটির বাবা ইকবাল হোসেনকে চাপা দিয়ে চলে যায় কাভার্ডভ্যান। তিন বছরের শিশুটি প্রত্যক্ষ করে মর্মান্তিক এক দৃশ্য। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর ইকবালকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। শুক্রবার রাতে রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায় ঘটে এই দুর্ঘটনা।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম সমকালকে জানান, দুর্ঘটনায় শিশুটির শরীরে তেমন কোনো আঘাত লাগেনি। তবে তার চাচা মশিউর রহমান আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনের সূত্রে জানা যায়, ইকবাল হোসেন পেশায় ঠিকাদার ছিলেন। তিনি মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। শুক্রবার সকালে তিনি ছেলেকে নিয়ে শনির আখড়া এলাকায় তার ভাই ব্যাংক কর্মকর্তা মশিউর রহমানের বাসায় যান। সেখানে সারাদিন কাটিয়ে রাত ১১টার দিকে তারা ফিরছিলেন। মশিউর রহমান তার মোটরসাইকেলে ভাই ও ভাতিজাকে নিয়ে রওনা হওয়ার পর বৃষ্টি শুরু হয়। এ কারণে তিনি শনির আখড়া যাত্রীছাউনির কাছে মোটরসাইকেলটি থামান। তখনই বেপরোয়া গতির কাভার্ডভ্যানটি এসে মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে দুই ভাই দুই দিকে ছিটকে পড়েন। বাম দিকে পড়া মশিউরের বুকের ওপর পড়ে রক্ষা পায় সাজিদ। আর ডান দিকে পড়া ইকবালের শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায় কাভার্ডভ্যানের চাকা।
নিহতের ভাই শিক্ষক সারোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, কাভার্ডভ্যানের চালক সম্ভাবত নেশাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি খুবই অস্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ধাক্কা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষলেও হয়তো ইকবালকে বাঁচানো যেত। কিন্তু তিনি (চালক) গাড়ি না থামিয়ে দ্রুত চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। কাভার্ডভ্যানের চাপায় ঘটনাস্থলেই ইকবাল মারা যান। তবু শেষ চেষ্টা হিসেবে তার থেঁতলে যাওয়া রক্তাক্ত দেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জানান, আগেই মৃত্যু হয়েছে তার।
ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে ইকবাল ছিলেন চতুর্থ। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম আলতাফ হোসেন। ঢামেক হাসপাতাল থেকে ইকবালের মরদেহ শনিবার তার গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন