দুর্গাপূজা ঘিরে জঙ্গি হামলার শঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকি দুই ধরনের হয়। একটি জঙ্গি হামলা, অন্যটি ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে উসকানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি। জঙ্গি হামলার শঙ্কা আমরা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না। কারণ এক মাস ধরে আমরা একটি বিষয় নিয়ে কাজ করছি- ৫০ জন ছেলে বাড়ি ছেড়েছে। তারা কোথায় ট্রেনিং নিচ্ছে আমরা এখনও তা জানি না। আমাদের গোয়েন্দারা এ নিয়ে কাজ করছেন। আশা করি, তারা মাঠপর্যায়ে কোনো অপারেশনে আসার আগেই ধরে ফেলতে পারব। সেইসঙ্গে গুজব রোধেও চলছে সাইবার টহল।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পূজায় অপতৎপরতা ঠেকাতে এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সারাদেশের ডিসি-এসপিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। কোথাও কোনো অপতৎপরতার খবর পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডিসি-এসপিরা ওইসব জায়গায় যাবেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করবেন। যারা গুজব ছড়াবেন তাদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে।
ঢাকার পুলিশ প্রধান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে, ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেওয়ার একটি প্রবণতা সবসময় থাকে। গত বছর কুমিল্লার একটি মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, তেমন অপচেষ্টা এ বছরও থাকতে পারে।

তিনি বলেন, কোনো পূজামণ্ডপে প্রতিমা থাকা অবস্থায় সেখানে সার্বক্ষণিক মানুষ থাকতে হবে। প্রতিমা বানানোর আগে থেকেই আমরা আয়োজকদের এ নির্দেশনা দিয়েছি। ঢাকা মহানগরীর যেসব স্থানে প্রতিমা বানানো হচ্ছে, সেসব স্থানে পুলিশ মোতায়েন আছে। মন্দির কমিটি ও পুলিশের পক্ষ থেকে যদি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে মনে হয় না কোথাও প্রতিমা ভাঙ্গার আশঙ্কা থাকবে।

ডিএমপি কমিশনার জানান, ঢাকা মহানগরে এবার ২৪২টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে। এগুলোর মধ্যে 'ক' শ্রেণিভুক্ত পাঁচটি মন্দিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলোতে ডিএমপির পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে নজরদারি করা হবে। পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়াও আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে ভিভিআইপি নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। অন্য মন্দিরগুলোতে গুরুত্ব অনুযায়ী কোথাও একজন এসআই, কোথাও একজন এএসআইয়ের নেতৃত্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে আনসার ও মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।