- রাজধানী
- মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বাড়াতে হবে: সিপিডি
মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বাড়াতে হবে: সিপিডি

বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্থরতা ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন। ছবি- সংগৃহীত।
বর্তমানের সংকটি বৈশ্বিক। তবে অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার কারণে আমাদের দেশের জন্য সেটা বেশি প্রকট হচ্ছে। বিশ্বের ৪৫টি দেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ খাদ্যের মজুদ বাড়াতে হবে। ব্যয় সাশ্রয়ী উৎপাদনশীল পদক্ষেপে জোর দিতে হবে। এর মানে উৎপাদন, কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত না করে অন্য দিকে ব্যয় সাশ্রয়ী হতে হবে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সব পর্যায়ে বেতন বাড়াতে হবে।
গবেষণা সংস্থা সিপিডি আয়োজিত 'বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস এবং বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ : উত্তরণ কোন পথে' শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এমন অভিমত তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিং থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বর্তমানে ডলার, জ্বালানি, মূল্যস্ফীতি, খাদ্য, রাশিয়ার-ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এই ৭টি চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে সেখানে প্রকৃত তথ্যের প্রতিফলন হচ্ছে না। টিসিবির মূল্য তালিকা ধরে হিসাব করলেও দেখা যায় ২০, ৩০, ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে। বর্তমানে ঢাকায় চারজনের একটি পরিবারে প্রতি মাসে প্রয়োজনীয় ১৯টি খাদ্যপণ্য কিনতে অন্তত ২২ হাজার ৪২২ টাকা খরচ হয়। খাদ্য তালিকা থেকে মাছ, মাংসের মতো পুষ্টিকর খাবার বাদ দিলেও খরচ হয় ৯ হাজার ৫৯ টাকা। শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচও অনেক বেড়েছে। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি খাতে নূন্যতম বেতন বাড়ানো অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সরকার জ্বালানি তেলের দর কমাতে পারে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিবেচনায় ৬০ দিনের জ্বালানি মজুদ থাকাকে যথেষ্ট মনে করা হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে পেট্রোলিয়াম ও ডিজেল ছাড়া বাকি ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। পরিস্থিতি উত্তরণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে নজর দিতে হবে। রপ্তানি খাতে যেন বিদ্যুৎ জ্বালানির সংকটের প্রভাব না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা রপ্তানির সঙ্গে উৎপাদনশীলতা, বৈদেশিক মুদ্রা আয়, কর্মসংস্থান জড়িত। পাশাপাশি কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটজনক অবস্থায় নেমেছে। আর যেন না কমে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। রপ্তানির পাশাপাশি বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে শুধু স্বল্প মেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদী পদক্ষেপ দরকার। একই সঙ্গে তথ্যের সঠিকতা দরকার। সেটা না হলে পদক্ষেপের ভালো ফল আসবে না। টেকসই জ্বালানি খাতের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সংকট মোকাবিলায় সব স্টেকহোল্ডারদের যুক্ত করতে হবে। সরকারের সব বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে।
মন্তব্য করুন