- রাজধানী
- ভোটে নিরপেক্ষতা রক্ষায় সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ সুজনের
ভোটে নিরপেক্ষতা রক্ষায় সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ সুজনের

ভোটের মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে সংবিধান সংশোধনের তাগিদ দিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। তারা বলেছে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। গাইবান্ধার উপনির্বাচন এই বার্তাই দিয়েছে।
যদিও সংবাদ সম্মেলনে ওই উপনির্বাচন বন্ধে ইসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সুজন। একইসঙ্গে অনিয়ম ঠেকাতে পদক্ষেপ না নিয়ে নির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এ সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রশাসন ও আইনশঙ্খলা বাহিনীতে সীমাহীন দলীয়করণের কারণে আজ দলীয় সরকারের অধীনে উপনির্বাচনও সুষ্ঠু করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ পেতে চাইলে এবং ভবিষ্যত জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে চাইলে সাংবিধানিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে।
বিদ্যমান দলীয় সরকার পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-এমন মন্তব্য করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশে এ পর্যন্ত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাতটি দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে। সেখানে যারা ক্ষমতায় ছিল বা যে সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে, তারাই পুনরায় ক্ষমতায় থেকেছে এবং প্রতিটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে অনেক রকম প্রশ্ন উঠেছে। এজন্য নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষতার জন্য নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারও হতে পারে। আবার সর্বদলীয় সরকারও হতে পারে। এটি ঠিক করবেন রাজনীতিবিদরাই।
নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকেও এগিয়ে আসা উচিত-এমন মন্তব্য করে সুজন সম্পাদক বলেন, রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ইসির পক্ষ থেকে সুষ্পষ্টভাবে বলা উচিত সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সাংবিধানিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে।
১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে ইসিকে সরে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ইভিএম ব্যবহারের ফলে আরও বড় ধরণের ঝুঁকির সৃষ্টি হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনি। যেসকল অনিয়ম হয়েছে তা তাদের জানার কথা। তারা কেন আগ থেকে ব্যবস্থা নিলো না? ক্ষমতার রদবদল হবে না তারপরও একটি আসনের উপনির্বাচন সঠিকভাবে করতে পারেনি। সিসি ক্যামেরা বসিয়ে কিংবা ইভিএম ব্যবহার করে তাদের পক্ষে ৩০০ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভবপর হবে না।
গাইবান্ধার ভোট বন্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি ইসির এই পদক্ষেপকে সন্দেহজনক হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয় এই সংবাদ সম্মেলনে। কারণ অনিয়ম বন্ধে আগেভাগে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে-এমন মন্তব্য করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযোগ তোলা এবং প্রমাণ হিসেবে অনেক প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে সাদা কাগজে 'নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে' এমন প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার নজিরবিহীন পদক্ষেপ সন্দেহকে ঘনীভূত না করে পারে না। এছাড়াও কমিশনের এমন কঠোরতার কারণে জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আর প্রয়োজন নেই- একজন মন্ত্রীর এমন বক্তব্যও জনগণকে সন্দিহান করতে বাধ্য। এর মাধ্যমে এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
মন্তব্য করুন