ষষ্ঠবারের মত আয়োজিত হচ্ছে তরুণ সংগঠকদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করা ইয়াং বাংলার জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। শনিবার তরুণ ১০ সংগঠনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) চেয়ারপারসন সজীব ওয়াজেদ জয়। 

এই অ্যাওয়ার্ড অর্জনকে স্বপ্ন যাত্রার শুরু হিসেবেই দেখছে বিজয়ীরা। আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করা বেশ কিছু সংগঠক জানিয়েছে, জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি অর্জনে রেখেছে বড় ভূমিকা।

২০২০ সালে 'শিশুদের নোবেল' খ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার লাভ করেছেন সাদাত রহমান। এই পুরস্কার জয়ের পেছনে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জনকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, মফস্বল এলাকায় থেকে উপজেলা-জেলা পর্যায়ে সামাজিক সংগঠন করলে খুব কম মানুষই সেটাকে উৎসাহিত করে। অনেকে পাগলামি বলেও অভিহিত করে। যখন নড়াইলে কাজ করি একই অবস্থা হয়েছিল আমার ক্ষেত্রে। কিন্তু ২০১৮ সালে যখন আমি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পেলাম, এরপর থেকে জেলা প্রশাসক, এসপি সবাই একটা মূল্যায়ন করতে শুরু করে। তারাও আমাদের কথা শুনতে চায়। আমরা যারা কাজ করি।

সাদাত রহমান বলেন, আমরা তো আসলে অ্যাওয়ার্ডের জন্য কাজ করি না। আমাদের নিজেদের ভালো লাগা থেকে আমরা কাজ করি। অ্যাওয়ার্ড পেলে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, পলিসি মেকিং করছেন তারা মূল্যায়ন করছেন। আমাদের সহকর্মীরা শুধু এলাকা নয় সারা দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখছে। যেনো সবখানে কাজ করা যায়। স্বীকৃতি পেলে সেটা জেলা, বিভাগ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সহায়তা করে।

২০১৭ সালে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড জয় করা বরিশাল ইয়ুথ সোসাইটির (বিওয়াইএস) প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক ফায়েজুদ্দিন বেলাল (ফায়েজ বেলাল) ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে সম্মানজনক ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলবো, এটা দেশের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার। যেখান থেকে আমাকে তুলে ধরতে পেরেছি। অন্যদের কাছেও আমার পরিচয় তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে এই অ্যাওয়ার্ড লাভের মাধ্যমে। আমাদের সমাজে যেসব তরুণরা কাজ করছেন, জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড তাদেরকে তুলে ধরছে, পরিচিত করাচ্ছে। 

ফায়েজুদ্দিন বেলাল বলেন, সাধারণত আমরা যেসব পুরস্কার দেখি, তাতে শহরের লোকজনকে তুলে ধরা হয়। কিন্তু জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড একেবারেই আলাদা। সেখানে বরিশাল, রংপুরের মত প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণদেরও তুলে ধরা হয়েছে। এই অ্যাওয়ার্ড একটা অনুপ্রেরণা। এই অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমেই আমি বিশ্ব জুড়ে পরিচিতি পেয়েছি। বিবিসিতেও আজকে ইন্টারভিউ দিলাম। সেখানে বলেছি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড না হলে হয়তো  আমরা এমন বিস্তৃতভাবে কাজ করতে পারতাম না। তারা অনেকের সঙ্গে যুক্ত করে দিচ্ছে। এটা সম্ভব হচ্ছে ইয়াং বাংলার জন্য। এ জন্য ছোট বা বড় যে কাজ হোক। এখানে আবেদন করা উচিত। কারণ এখানে পুরস্কার পেলে সেটা আরও বড় ভাবে কাজ করতে সহায়তা করবে।

তিনি আরও বলেন, ইয়াং বাংলার মত একটি প্লাটফর্মকে আমি পেয়েছি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জনের মাধ্যমে। বাংলাদেশে তরুণদের সবচাইতে বড় এই প্লাটফর্মের কারণেই দেশজুড়ে আমি কাজ করতে পেরেছি। যে কোন সংগঠনের জন্য এটি অনেক বড় একটি সুযোগ।

সমাজ সংস্কার ও নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের ৩০ বছর বা তার কম বয়সী সামাজিক উদ্যোক্তাদের এশিয়ার সেরা ৩০ জনের তালিকায় স্থান পান আমাল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইসরাত করিম ইভা। ২০২১ সালে তিনি অর্জন করেন জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। এটি তার ক্যারিয়ারের সবচাইতে বড় অর্জন বলে মনে করেন ইসরাত ইভা। 

তিনি বলেন, জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের সবচেয়ে বড় দিক হলো, আপনি যেখানকারই হোন না কেনো। আপনার কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে। আমাদের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। আমরা এখন চেষ্টা করছি আরও কাজ করার, মানুষের পাশে থাকার। এটি একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।