মিরপুর-১ থেকে ফার্মগেটের ভাড়া ১৮ টাকা। কিন্তু কোনো বাসই ২০ টাকার কম নিত না। কিছু বাসে ২৫-৩০ টাকাও আদায় করা হতো। ই-টিকিটের গায়ে টাকার অঙ্ক লেখা থাকায় যাত্রীর কাছ থেকে এখন নির্ধারিত ভাড়াই নিতে হচ্ছে।

গতকাল রোববার থেকে মিরপুর অঞ্চলের ৩০টি কোম্পানির বাসে ই-টিকিট চালু হওয়ার প্রথম দিনে সরেজমিন এ চিত্র দেখা যাচ্ছে। তবে বিপত্তিও রয়েছে। আগে পাঁচের গুণীতক হিসাবে ভাড়া নেওয়া হতো। এখন তালিকা অনুযায়ী ভাড়ার কারণে ভাংতি টাকা নিয়েও যাত্রী-হেলপারের চলছে বচসা। আবার অধিকাংশ বাসে এখনও পস মেশিন নেই। যাত্রীরা জানিয়েছেন, ভাড়া কিছুটা কমেছে। কিন্তু টিকিটের গায়ে দূরত্ব লেখা নেই। এক কাউন্টার থেকে আরেক কাউন্টারের নাম লেখা। তাই বুঝতে পারছেন না আসলে সঠিক ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কিনা।

সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, সোমবারের (আজ) মধ্যেই সব বাসে পস মেশিন থাকবে। তবে হেলপারদের ভাষ্য, তাঁদের ঝামেলা ও কাজ বেড়েছে। ভাড়া কাটতে বেশি সময় লাগছে। মেশিন চালানোও তাঁদের জন্য কঠিন।

গত সেপ্টেম্বরে রাজধানীতে আটটি কোম্পানির বাসে পরীক্ষামূলকভাবে ই-টিকিট চালু করে মালিক সমিতি। পরীক্ষা সফল হওয়ায় ঢাকার ৬০টি কোম্পানির ৩ হাজার ১১৪টি বাসে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এবং পার্শ্ববর্তী পাঁচ জেলায় ৩৭টি কোম্পানির ২ হাজার ৫৩৬টি বাসে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ই-টিকিট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমিতি।

মো. শহীদ জানান, চিড়িয়াখানা থেকে সদরঘাটের ভাড়া নিতেন ৫০ টাকা। এখন মেশিনে আসছে ৪৫ টাকা। এই ভাড়াই নিচ্ছেন। এতে যাত্রীর লাভ। শ্যামলী থেকে চিড়িয়াখানার ভাড়া ১৫ টাকা নিতেন। মেশিনে প্রিন্ট আসা টিকিটে ভাড়া লেখা ১৩ টাকা। কিন্তু ভাংতি নেই বলে যাত্রীরা ১৩ টাকা দিতে চান না। ১০ অথবা ১২ টাকা দেন। ভাংতি সমস্যার জন্য ১৫ টাকা নিলে গালাগাল করেন। বাসটির যাত্রী কাওসার হোসেন জানালেন, দু'এক টাকা ভাড়া কমেছে। পস মেশিন কতদিন থাকবে এ প্রশ্ন রেখে এই যাত্রী বলেছেন, দেশে তো ভালো জিনিস বেশি দিন টেকে না।

তবে ই-টিকিটিং সেবা দেওয়া যাত্রী সার্ভিসেস লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসফাক সমকালকে বলেছেন, মেশিন কাজ না করার কারণ নেই। হেলপারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে আয়ত্তে আসতে তাঁদের কয়েকদিন লাগবে। মিরপুর অঞ্চলের ৩০টি কোম্পানিকে ২ হাজার পস মেশিন দেওয়া হয়েছে। মেশিনে বিআরটিএর ভাড়ার তালিকা ইনপুট দেওয়া হয়েছে।