খিলগাঁওয়ে আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ, সাততলা ভবন সিলগালা

সিলগালা করা ভবন। ছবি: সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪ | ১৫:৩০
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ করায় একটি সাততলা ভবন সিলগালা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে খিলগাঁওয়ে অভিযান শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় ভবনটি সিলগালা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম এ আদালত পরিচালনা করেন।
অভিযানের শুরুতে খিলগাঁওয়ের শহীদ বাকী সড়কের সি ব্লকের ৫৬৬/এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় শর্মা কিং রেস্তোরাঁয় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে এ সময় রেস্তোরাঁর মালিক বা ব্যবস্থাপক ছিলেন না। তাদের মোবাইল ফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। এছাড়া রেস্তোরাঁর কর্মীরাও কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
দুপুর ১২টায় এই রেস্তোরাঁ থেকে বের হয়ে একই ভবনের তৃতীয় তলায় পাস্তা ক্লাব নামে আরেকটি রেস্তোরাঁয় ঢোকেন আদালত অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা। এই রেস্তোরাঁয়ও মালিককে পাননি ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ভবনের সামনে অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ অনুযায়ী ‘এই ভবনটি অগ্নিনিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা একটি ব্যানার টানিয়ে দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধিরা। পরে সাততলা এ ভবনটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সরেজমিনে এই ভবনের প্রতিটি তলায় একটি করে রেস্টুরেন্ট দেখা গেছে। নিচতলায় ছিল একটি গার্মেন্টসের শো-রুম। আর পার্কিংয়ের জায়গায় একটি রেস্টুরেন্টের নির্মাণকাজ চলতে দেখা গেছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, অগ্নিঝুঁকি থাকায় ভবনটি আপাতত বন্ধ থাকবে। ভবন মালিক এবং সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁর মালিকরা সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিকে মঙ্গলবার সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানের আগাম খবর পেয়ে খিলগাঁও এলাকার অধিকাংশ রেস্তোরাঁ এদিন সকাল থেকেই খোলেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, খিলগাঁওয়ে গড়ে ৯০ শতাংশ রেস্তোরাঁ আবাসিক ভবনে গড়ে উঠেছে। ফলে এলাকাটি আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে, যা রাজউকের আইন অনুযায়ী অবৈধ।
সি-ব্লকের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের পর সোমবার ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালানো হবে, ব্যবসায়ীরা তা আগে থেকেই জানতে পারেন। ফলে সকাল থেকে তেমন কোনো রেস্তোরাঁই খোলেনি। অথচ এই শহীদ বাকী সড়কে শতাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে।
আজ এই সড়কের অন্যান্য রেস্তোরাঁও বন্ধ দেখা যায়। বন্ধ রেস্তোরাঁগুলো যেসব ভবনে অবস্থিত সেগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
উল্লেখ, সোমবার সকাল থেকে খিলগাঁওয়ের রেস্তেরাঁগুলোতে অভিযান চালান রাজউকের জোন ইন্সপেক্টররা। এ সময় ৩৬৮/বি খিলগাঁও, স্কাই ভিউ নাজমা টাওয়ারের নয়টি রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে সটকে পারে রেস্টুরেন্ট মালিকেরা। এছাড়া আল-আকসা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, ইজা রেস্টুরেন্ট, পপাইজ কফি অ্যান্ড ফাস্টফুড, কোকো ক্যাফে, বিএফসি, হারফি রেস্টুরেন্টসহ আরও কয়েকটিতে অভিযান চালায় রাজউক। এসময় রেস্টুরেন্ট নির্মাণের অনুমতিপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের অনুমতিপত্র দেখাতে না তাদের রেস্টুরেন্ট বন্ধে মৌখিক নির্দেশনা দেয় রাজউক।
- বিষয় :
- রাজধানী
- রেস্তোরাঁ
- অভিযান
- ভ্রাম্যমাণ আদালত