দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচারণা না পাওয়ায় পর্যটন শিল্প যে হারে প্রসারিত হওয়া কথা, তা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি দেশের দর্শনীয় স্থানের বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য সকল মাধ্যমে তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের হোটেল পেনিনসুলায় পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ১৩তম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান পর্যটন স্থানগুলোর পাশাপাশি এ অঞ্চলের কুতুবদিয়া, মহেশখালীর সৌন্দর্য গণমাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। একইসঙ্গে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবালসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জাহাজে করে হজযাত্রী প্রেরণ বিশ্বে দেশীয় পর্যটন খাতকে আরও আকর্ষণীয় করবে।

মাহবুব আলী বলেন, দেশে প্রায় সতেরশ পর্যটন স্পট রয়েছে। রয়েছে বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ পর্যটন পণ্য। রয়েছে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতি, বহুমাত্রিক জীবনাচার ও উষ্ণ আতিথিয়েতা। কিন্তু এসব বিষয় দেশি বিদেশি গণমাধ্যমে কমই তুলে ধরা হয়। মানুষকে কম জানানো হয়। ফলে ক্রমবর্ধমান পর্যটন শিল্প যে হারে বাড়ার কথা, তা হচ্ছে না। তাই পাহাড়, সমতল, বনভূমি, সাগর, মহাসাগর, উপত্যকা বেষ্টিত দর্শনীয় স্থানগুলোর বৈচিত্র ও সৌন্দর্য সব মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে কক্সবাজারের সাবরাং নাফ ও সোনাদিয়াতে তিনটি পর্যটন পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, পুরনো টার্মিনাল সংস্কার, যশোর, সৈয়দপুর, কক্সবাজার বিমানবন্দর নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। নতুন করে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এ লক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সাথে সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থাসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হচ্ছে।

একইসঙ্গে বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পর্যটন পণ্যের উন্নয়ন, ভিসা প্রদান পদ্ধতি সহজীকরণ, সৃজনশীল ও গতিশীল বিপণন ও পর্যটন সেবার প্রচারে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান ইকবাল, এয়ার এস্ট্রার প্রধান নির্বাহী ইমরান আসিফ, ইউএস বাংলার ম্যানেজার কামরুল ইসলাম ও ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের মার্কেটিং প্রধান আ্যানা মে ডিয়াল।

তিন দিনব্যাপী এই মেলায় টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে এয়ার এস্ট্রা। মেলায় ৬টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানসহ ৩৫টি স্টল স্থান পেয়েছে। মেলায় ভিজিটরদের জন্য আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র'র ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবার জন্য উম্মুক্ত এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আগামী ৭ জানুয়ারি এই মেলা শেষ হবে।