- রাজধানী
- কেউ স্বজন হারিয়ে কাঁদছেন, কেউ উদ্বিগ্ন মুখে অপেক্ষায়
সরেজমিন: ঢামেক হাসপাতাল
কেউ স্বজন হারিয়ে কাঁদছেন, কেউ উদ্বিগ্ন মুখে অপেক্ষায়

উদ্বিগ্ন মুখে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ। কেউ আবার উচ্চ স্বরে কাঁদছেন। একটু পরপরই শোনা যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন। মানুষের ভিড় সরিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আসার পথ করে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মুহূর্তে শোরগোল পড়ে যাচ্ছে। কেউ তাড়াহুড়া করে স্ট্রেচার নিয়ে আসছেন। কেউ রোগীকে নামাতে সহায়তা করছেন। এর পর ছুটছেন জরুরি বিভাগে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এমন চিত্র দেখা যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে।
গুলিস্তান এলাকার সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের পর একে একে আহতদের নেওয়া হয় ঢামেক হাসপাতালে। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা মৃতদেহগুলোও পাঠানো হয় ঢামেক মর্গে। ফলে স্বজনরা ভিড় করেছিলেন এ হাসপাতালে। পরিস্থিতি সামলাতে স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ গুণ চিকিৎসক ও নার্স দায়িত্ব পালন করেন। তার পরও যেন রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের।
সরেজমিন দেখা যায়, জরুরি বিভাগের ভেতরে ও সামনের অংশে যেন তিল ধারণের জায়গা নেই। স্ট্রেচারে কাতরাতে থাকা প্রিয়জনকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চিৎকার করছেন অনেকে। কিন্তু এর আগে আসা আহতদের চিকিৎসা তখনও শেষ হয়নি।
জরুরি বিভাগের প্রবেশপথের বা পাশের একটি বেঞ্চে বসে কাঁদছিলেন কয়েক নারী-পুরুষ। কাছে গিয়ে জানা যায় তাঁদের পরিবারের দুই সদস্য বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা গেছেন। তাঁদের একজন ব্যবসায়ী মনসুর হোসেন, অপরজন তাঁর খালাতো ভাই আল আমিন।
মঙ্গলবার ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য কর্মীদের জন্য ছিল রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষার দিন। অল্প সময়ে বিপুলসংখ্যক আহত মানুষকে চিকিৎসা দিতে হয়েছে তাঁদের। সেই পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উতরেও গেছেন তাঁরা।
আরও অনেক চিকিৎসকের সঙ্গে এদিন দায়িত্ব পালন করেন ক্যাজুয়ালটি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার নুরুউল-কবির। তিনি সমকালকে বলেন, একসঙ্গে এত আহত মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল না। একের পর এক রোগী আসতে থাকেন। কারও হাত ভেঙেছে, কারও পা। কারও আবার মাথা ফেটেছে। কেউ শরীরের অন্যান্য অংশে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। ক্ষত থেকে রক্ত ঝরছে। কাউকে আবার অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে আনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন