ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও যৌক্তিক দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মানতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। সেই সঙ্গে অবিলম্বে রমজান মাসে বাজারে পণ্যমূল্য জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার দাবি জানান তারা।

শনিবার দুপুরে রাজধানীতে এক সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। 

যুগপৎ আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির পেছনে এই সমাবেশের আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট। তবে জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির কেউ আজকে ছিলেন না।

জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে ও আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিবর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, ইসলামী ঐক্যজোটের অধ্যাপক আবদুল করিম, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ এলডিপির তমিজউদ্দিন টিটু, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জাগপার আসাদুর রহমানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে যা দরকার তা মেনে নিতে হবে। কিন্তু এই সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আদালতে রায় অমান্য করেছে। রায়ে বলা হয়েছিল আরও দুটি জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এই সরকার সেই রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তা বাতিল করেছে।

সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, কদিন পরই রমজান মাস শুরু হচ্ছে। অবিলম্বে বাজারের পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন। না হলে মানুষের কষ্ট হলে সেই অভিশাপে আপনার জ্বলে যাবেন। আমরা জরুরি ভিত্তিতে বাজারের পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে দাবি জানাই। প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যত লাগে ডলার খরচ করুন। পারলে বিনামূল্যে ইফতার সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

সমাবেশে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে সরকার ও সরকারি দলের আচরণ তত ভয়ঙ্কর ও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। পরাজয়ের আতঙ্কে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোটে অবাধ নির্বাচনকে এই সরকারের সবচেয়ে বড় ভয়। কারণ জনগণের রায় নিয়ে সরকার গঠনের সাহস এই সরকারের নেই। 

তারা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সরকারি দলের জালিয়াতির পক্ষে পুলিশের ভূমিকা দেশের মানুষকে হতবাক করে দিয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হওয়া এবং ছবি তোলার অপরাধে সাংবাদিকদের বেধড়ক পিটিয়ে নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ এলাকা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারালয়ে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় নজিরবিহীন কলঙ্ক অধ্যায় রচিত হয়েছে। মানুষের শেষ ভরসাস্থলটাও ভেঙে পড়েছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর মহড়া এই নির্বাচন। এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন যে সম্ভব নয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পেশিশক্তি ও পুলিশি আক্রমণের ভূমিকা তার সর্বশেষ জ্বলন্ত প্রমাণ।