বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণি আছে, তাই অর্থনীতি নিয়ে হতাশার কিছু নেই। দেশে ৫ শতাংশ থেকে মধ্যবিত্ত এখন ৩০ শতাংশ। বিশেষ করে গত ১৪ বছরে মধ্যবিত্তের বিকাশ রীতিমতো বিস্ময়ের। ফলে বর্তমান বৈশ্বিক সংকটেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস আয়োজিত আবদুল গফুর স্মারক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএসের কার্যালয়ে সরাসরি এবং অনলাইনে এই স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়। বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গবেষক, শিক্ষাবিদরা উপস্থিত ছিলেন।

মধ্যবিত্তের সংগ্রাম-লড়াই সম্পর্কে ড. আতিউর বলেন, ‘মধ্যবিত্তরাই সব ধরনের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। রাজনৈতিক নেতৃত্বে থাকা মধ্যবিত্তের শক্তির জায়গা ছিল সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততা। একেবারে গোড়া থেকেই এ আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন তরুণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনীতি মধ্যবিত্তের হাত ধরেই এগিয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতে অনেক দেশ সংকটে পড়েছে, ব্যাংক দেউলিয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বরং সংকটের মধ্যে এগোচ্ছে।’ 

অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত আলোচনায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেন, ‘অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন ঐতিহাসিক ছয় দফা এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ইশতেহার ছিল। অথচ স্বাধীন দেশের রাজনীতি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের দখলে চলে গেছে। জাতীয় সংসদের দিকে তাকালেই  সেটা  স্পষ্ট বোঝা যায়। সব শক্তি এখন ব্যবসায়ীকেন্দ্রিক।’

ড. বিনায়ক সেন বলেন, ‘সব আন্দোলন-সংগ্রামের মতো মধ্যবিত্তরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। আজকের মধ্যবিত্তের মধ্যে সেই চেতনা আছে কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ।’