- রাজধানী
- মাঠে খেলবে শিশুরা, হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার বর্ষপূর্তিতে বক্তারা
মাঠে খেলবে শিশুরা, হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনে বিজয়ের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি মেলেনি। শনিবার দুপুর থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে মাঠ ও আশেপাশের সড়ক ঘিরে রাখা হয়। ছবি- সমকাল।
রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ দেশের সব মাঠ রক্ষা আন্দোলনের অনুপ্রেরণা। এলাকাবাসী একত্রে থাকলে যে কোনো মাঠই উদ্ধার করা যায়। এ মাঠে বাচ্চারা খেলবে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। বক্তৃতা হবে, আমরা জড়ো হবো।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা এসব বলেন।
গত বছর তেঁতুলতলা মাঠে কলাবাগান থানা ভবন তৈরির জন্য পুলিশ কাজ শুরু করে। পরে এলাকাবাসী আন্দোলন শুরু করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঠটিতে স্থাপনা তৈরি না করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত রাখার ঘোষণা দেন। এই সফলতার বর্ষপূর্তি ছিল শনিবার। এ উপলক্ষে কয়েকটি সংগঠন যৌথভাবে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তেঁতুলতলা মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তবে রোববার সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে মাঠে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়নি। পরে বিকেলে সংক্ষিপ্ত পরিসরে শোভাযাত্রা ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
নারী আন্দোলনের নেত্রী খুশী কবির বলেন, এ মাঠটি ধরে রাখার জন্য সৈয়দা রত্না ও তাঁর ছেলে পুলিশের হাতে আটক হন। এরপর সবাই থানার সামনে গান করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের দাবি ছিল, মাঠটি রক্ষা করতে হবে। পরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই মাঠটি রক্ষার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, এ মাঠে বাচ্চারা খেলবে, অনুষ্ঠান-বক্তৃতা হবে। আমরা জড়ো হবো। সারাদেশে অনেক মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী একত্রে থাকলে মাঠ উদ্ধার করা যায়, তেঁতুলতলা মাঠ তার উদাহরণ।
তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক সৈয়দা রত্না বলেন, শিশুদের জন্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আজ চোখে পড়ে না। সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার। সংস্কৃতি চর্চা না হলে মাঠ রক্ষার বোধ জাগবে না।
স্থপতি ইকবাল হাবীব বলেন, আমাদের সত্যিকার অর্থে এলাকার মাঠ, খাল রক্ষার জন্য দাবি তুলতে হবে। সৈয়দা রত্না যে দাবি তুলেছেন তাতে সরকারের উচ্চমহল সাড়া দিয়েছে। তাঁর এ আন্দোলন গোটা দেশের আন্দেলনের একটা প্রতীক।
পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এলাকাবাসীর আহ্বানে এখানে ঢুকতেই দেখি মোড়ের মধ্যে পুলিশ। একটু অবাক হয়ে গেলাম এত পুলিশ কেন। পরে শুনি এখানে অনুষ্ঠান করতে অনুমতি লাগবে। এসএসসি পরীক্ষার কারণে আমরা অনুষ্ঠান করব না। পরে বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করব। ছোট্ট বাচ্চাগুলো যেন বিরূপ অবস্থার শিকার না হয়। তাদের যেন মনে না হয়, খেলার মাঠের জন্য প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়াতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উদীচীর সহসভাপতি জামশেদ আনোয়ার তপন, মহিলা পরিষদের নেত্রী রেখা চৌধুরী, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসাইন প্রমুখ।
মাঠ রক্ষা আন্দোলনের বিজয়ের এক বছর উদযাপনে আয়োজক সংগঠনগুলো হলো– এএলআরডি, আসক, বাপা, বেলা, ব্লাস্ট, ব্রতী, গ্রিন ভয়েস, গণসাক্ষরতা অভিযান, নিজেরা করি, নাগরিক উদ্যোগ, নারীপক্ষ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, মহিলা পরিষদ, গ্রিন সেভার্স, কলাবাগান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ও তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলন।
শনিবার দুপুর থেকে তেঁতুলতলা মাঠের আশপাশের সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মাঠের দিকে কেউ প্রবেশ করলে নাম-পরিচয় লিখে রাখছিল পুলিশ। কলাবাগান থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, এসএসসি পরীক্ষার কারণে মাঠে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়। আয়োজকরা তা মেনে নিয়েছেন।
মন্তব্য করুন