ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব ধরনের গণবিরোধী এবং নিপীড়নমূলক আইন বাতিল করার দাবিতে ‘প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ’ এর ব্যানারে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে ৩০টির বেশি সংগঠন। শনিবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।


সমাবেশে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ৭২’র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশেষত গণমাধ্যম, শিক্ষক, ছাত্র, শিল্পীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই আইনে হয়রানি করা হচ্ছে। বিরোধী মত দমনের অন্যতম হাতিয়ার বানানো হয়েছে এ আইনকে। এই আইন সংশোধনের কথা বলা হচ্ছে। এটি আরও হাস্যকর। এর মাধ্যমে আইনকে আরও কঠোর করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, বিদেশি, পাকিস্তানি শাসনের পর বাংলাদেশ এখন স্বদেশি উপনিবেশে পরিণত হয়েছে। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছোটাছুটি শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক মনোভাবের প্রকাশ আমরা দেখি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৪৯৯ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট প্রভৃতি উপনিবেশের আইনের মিল রয়েছে এই আইনের সঙ্গে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংস্কার আরও হাস্যকর। যখন বলা হয়, এটি সংস্কার করা হবে। আমরা মনে করি, সংস্কারের নামে এটাকে আরও কঠোর করা হবে। এর পরবর্তী সময়ে ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট খসড়া হয়েছে। এই আইন বাতিলের বিকল্প দাবি আর নেই।

বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জেড আই খান পান্না বলেন, শুধু ডিএসএ কি বাতিল চাই নাকি সব নিবর্তনমূলক আইন বাতিল চাই? এই আইন না থাকলে বিচার হবে দণ্ডবিধি অনুযায়ী। এই আইন হয়েছিল সিপাহি বিদ্রোহকে সামনে রেখে। সিপাহি বিদ্রোহ দমন করার জন্য। এর পর পুলিশ আইন হয়। এসব আইন সামনে রেখে ৭২ এর সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে আপনি কীভাবে বিচার করবেন? একজন আইনজীবী হিসেবে আমি সব নিবর্তনমূলক আইনের বিচার চাই।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে সমাজ অনুশীলন কেন্দ্রের অভিজিৎ রায় রঘু, সংহতি সংস্কৃতি সংসদের ইফতেখার আহমেদ বাবু, ভাসানী পরিষদের ডা. হারুন অর রশিদ, প্রগতি লেখক সংঘের সহসভাপতি জাকির হোসেন, আসাদ পরিষদের শামসুজ্জামান মিলন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা গান ও কবিতা পাঠ করেন।