
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য সিকিম। এই রাজ্য ঘিরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ভুটান, নেপাল ও তিব্বত। সিকিমের রাজধানী শহর গ্যাংটকের প্রতি পর্যটকদের রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। কারণ, সেখানে তুলনামূলক কম খরচে প্রাকৃতিক লেক, জলপ্রপাত ও হিমালয় দেখা যায়। গ্যাংটকে এখন হালকা শীত। তাই গরম থেকে কিছুদিন রেহাই পেতে সেখানে ছুটছেন পর্যটকরা।
গ্যাংটক শব্দের অর্থ ‘পাহাড় কাটা’। সিকিম ভ্রমণে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ‘লাচুং’ বা ‘ছাঙ্গু লেক’। তবে গ্যাংটকের প্রতি আকর্ষণ অন্যরকম। ‘পাহাড় কাটা’ নামের অর্থ থেকেই বোঝা যায়, সেখানে পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে গড়ে উঠেছে বাড়ি। শহরের মূল সড়কের যে পাশেই অলিগলি চোখে পড়বে, সেটাই পাহাড়ের ওপর অথবা নিচের দিকে যাওয়া-আসার পথ। রাস্তা কোথাও ঢালু, কোথাও সিঁড়ি করা গলিপথ।
গ্যাংটকের অন্যতম প্রধান দর্শনীয় স্থান এম জি মার্গ বা মহাত্মা গান্ধী মার্গ রোড। সড়কের মাঝে বসার জায়গা, দুই পাশে সুসজ্জিত দোকানপাট, পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট– সব মিলিয়ে অন্যরকম স্বর্গীয় পরিবেশ। এম জি মার্গে মহাত্মা গান্ধীর সুন্দর মূর্তি রয়েছে। এই সড়কের নির্দিষ্ট একটি অংশে শুধু হাঁটাচলার ব্যবস্থা, কোনো গাড়ি-ঘোড়া চলতে পারে না। সড়কদ্বীপজুড়ে আছে বাহারি ফুলের দোকান। সড়কদ্বীপের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা বাহারি ল্যাম্পপোস্টের আলো চোখ জুড়িয়ে দেয়। ফুটপাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে নেওয়া যায়।
রোপওয়ে চড়ে আকাশপথেও দেখা যায় গ্যাংটক ও চারপাশের দৃশ্য। এই সময়ে দিনে গ্যাংটকের আকাশে মেঘ ঘুরে বেড়ায়। মাঝেমধ্যে হালকা শীতের সঙ্গে হালকা বৃষ্টির ঝাপটা দারুণ পরিবেশ তৈরি করে।
এম জি মার্গের দক্ষিণ পাশের শেষ মাথায় ‘নাম নাং’ রোড। এই সড়ক ধরে ৫ মিনিট এগোলেই ‘কেবল কার’। এতে ধাতব তারে ঝুলে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়া-আসা করা যায়। ওপর থেকে দেখা যায় পুরো গ্যাংটকের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।
গ্যাংটকে আসা প্রায় সব পর্যটকই ছাঙ্গু লেক, নাথুলা ও বাবামন্দিরের দিকে পা বাড়ান। ছিমছাম এই শহরের বাসিন্দারাও বন্ধুসুলভ। এখানকার পুলিশ খুবই আন্তরিক। যে কোনো প্রয়োজনে সাহায্য পাওয়া যায়। আর পর্যটকদের সহযোগিতার জন্য আছে সিকিম ট্যুরিজম ইনফরমেশন সেন্টার। অবশ্য গ্যাংটকের হোটেল ব্যবস্থাপকরাই পর্যটকদের সব ধরনের সহযোগিতার জন্য যথেষ্ট। বিশেষ করে ছাঙ্গু লেকে যাওয়ার ব্যবস্থা তাঁরাই করে দেন।
শিবাম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী জয়ন্তী চক্রবর্তী পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গ্যাংটকে দুটি রিসোর্ট পরিচালনা করেন তিনি। জয়ন্তী চক্রবর্তী বলেন, এখানে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত পর্যটকের ভিড় বেশি থাকে। গ্যাংটক এখন পর্যটকে ভরপুর।
মন্তব্য করুন