- রাজধানী
- বহদ্দারহাট টার্মিনাল সংস্কার না হলে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি
দক্ষিণ চট্টগ্রামে দুই ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ
বহদ্দারহাট টার্মিনাল সংস্কার না হলে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি

বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংস্কারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ। ছবি-সমকাল
চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংস্কার ও পরিত্যক্ত ঘোষণার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে দুই ঘণ্টা ধর্মঘট করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার, বান্দরবান ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলামুখী সকল ধরনের বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ ছিল। এতে সময়মতো নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি যাত্রীরা। এই সময় বহদ্দারহাট টার্মিনাল চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিকরা। আগামী ৭ জুনের মধ্যে বাস টার্মিনাল সংস্কারসহ বিদ্যমান নানা সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ না নিলে ৮ জুন দক্ষিণ চট্টগ্রামে ধর্মঘট পালনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
সমাবেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) সভাপতি মৃণাল চৌধুরী বলেন, ‘বহদ্দারহাট আঞ্চলিক বাস টার্মিনাল আমাদের লড়াইয়ের ফসল। এটা চট্টগ্রামের একমাত্র বড় বাস টার্মিনাল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং উদাসীনতার কারণে বহুমুখী সমস্যায় এটা বর্তমানে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখানে প্রতিদিন মালিক সমিতি থেকে গাড়ি প্রতি ৩০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। তবুও এখানে কোনো উন্নয়ন করা হয়নি। বৃষ্টি পড়লে পানিতে ডুবে যায় পুরো টার্মিনাল। শহরের রাস্তাঘাট সব তিন ফুট করে উঁচু করা হয়েছে। কিন্তু টার্মিনাল আগে যা ছিল তাই আছে।’
আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. মুছা বলেন, ‘ইজারাদার নিয়মিত টাকা নিলেও টার্মিনালে কোনো আলোর ব্যবস্থা করেনি, পাহারাদার নেই, সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নেই। টার্মিনালের একমাত্র পুলিশ ফাঁড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কারণে বর্তমানে বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ, মাদক সেবনসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ আশংকাজনকভাবে বেড়েছে।’
সভায় শ্রমিক নেতারা বলেন, ভবিষ্যতে এই টার্মিনাল পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে বলে শুনেছি। হয়তো বা এখানে বড় বড় বিল্ডিং হবে। আমরা একসময় জেল রোডে ছিলাম, চেরাগী পাহাড়ে ছিলাম। এরপর এখানে এসেছি। আমরা রোদে পুড়েছি, বৃষ্টিতে ভিজেছি। সরকারের যে বড় বড় মেগা প্রকল্প হয় সেখানে টার্মিনালও অন্তর্ভুক্ত। সব হয়, কিন্তু কোনো টার্মিনাল হয় না।
তারা বলেন, বহদ্দারহাট টার্মিনালের এরকম বেহাল দশায় মালিকপক্ষেরও মাথা ব্যথা নেই, আবার সিডিএও নিশ্চুপ। এরকম পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে ও যাত্রীদের সুবিধার্থে আন্দোলন করা ছাড়া উপায় নেই। এ অবস্থায় দ্রুত বাস টার্মিনাল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া না হলে গণপরিবহন বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. মুছার সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, পশ্চিম পটিয়া আনোয়ারা ও বাঁশখালী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাহিন, বাঁশখালী সাতকানিয়া ও চকরিয়া সড়ক পরিবহন যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. হোসেন ও বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল শ্রমিক পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল কবির।
মন্তব্য করুন